বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই খুন মেজর-পত্নী?


নিহত শৈলজা দ্বিবেদী।

তিন বছর ধরে ফোনে কথোপকথন। স্বামীর অজান্তে ভিডিও কল, চ্যাট সবই চলত। কিন্তু বিয়ে করতে রাজি না হওয়ার জেরেই খুন হতে হল মেজরের স্ত্রীকে। দিল্লিতে মেজর-পত্নী খুনে ধৃত অন্য মেজর নিখিল হান্ডাকে প্রাথমিক জেরার পর এই তথ্য মিলেছে বলে দাবি করল দিল্লি পুলিশ। রবিবারই উত্তরপ্রদেশের মেরঠ থেকে নিখিলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিয়ে আসা হয় দিল্লিতে।

ধৃত মেজর নিখিল হান্ডা বর্তমানে নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে কর্মরত। বছর তিনেক আগে ডিমাপুরেই ছিলেন মেজর অমিত দ্বিবেদী। দু'জনের কাজও ছিল একসঙ্গেই।  সেই সূত্রেই অমিত দ্বিবেদীর স্ত্রী শৈলজার সঙ্গে আলাপ হয় নিখিলের। কিন্তু কিছু দিন পরই মেজর অমিত দ্বিবেদী দিল্লিতে বদলি হয়ে চলে আসেন।
পুলিশের দাবি, বদলির পরও মেজর হান্ডা শৈলজাকে নিয়মিত ফোন করে  কথা বলত। সেই সূত্রে দু'জনের ঘনিষ্ঠতাও বাড়ে। ফোনের পাশাপাশি চলত চ্যাট, ভিডিও কলিংও। এমনকি মেজর নিখিল হান্ডার সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ভিডিও কল করার সময় এক দিন ধরেও ফেলেন। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হয়। পাশাপাশি, নিখিলকেও তাঁর বাড়ি বা পরিবারের লোকজনের ত্রিসীমানায় আসতে নিষেধ করে দেন মেজর অমিত দ্বিবেদী। কিন্তু তার পরও তা থামেনি। স্বামীর অগোচরে কথোপথন চলতেই থাকে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত শৈলজার কল রেকর্ডস ঘেঁটে সেই তথ্য মিলেছে। কিন্তু নিখিলের বিয়ের প্রস্তাবে কছুতেই রাজি হননি শৈলজা।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, শনিবারই দিল্লিতে আসে মেজর নিখিল। ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় শৈলজার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে নিজের গাড়িতে নিয়ে যায় নিখিল। গাড়িতে ফের বিয়ের কথা বলে নিখিল। কিন্তু শৈলজা রাজি না হওয়ায় গাড়িতেই তাঁকে ছুরি দিয়ে খুন করে নিখিল। পরে দুর্ঘটনা বলে চালাতে মৃতদেহ রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেয়।

ঘটনার তদন্তে নেমে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ বুঝতে পারে, খুনের সঙ্গে মৃতার পরিচিত কেউ জড়িত। সেই অনুযায়ী তদন্ত শুরু করে। তদন্তকারী অফিসারদের একটি সূত্র শনিবারই জানিয়েছিল, প্রাথমিক ভাবে এক জন সেনা অফিসারকে তাঁরা সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন। এর পর রবিবারই মেরঠে গিয়ে অভিযুক্ত নিখিল হান্ডাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে আনা হয়েছে।

শনিবার সকালে ফিজিওথেরাপি করাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সেনা হাসপাতালে গিয়েছিলেন বছর তিরিশের শৈলজা। সেনার গাড়ির চালক তাঁকে হাসপাতালে নামিয়ে দিয়ে আসেন। আধ ঘণ্টা পর চালক তাঁকে আনতে গেলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, শৈলজা এ দিন ফিজিওথেরাপিই করাননি। তার আধ ঘণ্টা পরই রাস্তায় তাঁর গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয়।

শনিবারই দিল্লির রাজপথে উদ্ধার হয় মেজর অমিত দ্বিবেদীর স্ত্রী বছর তিরিশের শৈলজার গলাকাটা মৃতদেহ।