মৌসুমীর আত্মহত্যা ‘লাইভ’ দেখছিল প্রেমিক, গ্রেফতার করল পুলিশ


আত্মঘাতী হওয়ার সময় সোনারপুরের তরুণী যখন ফেসবুক লাইভ করছিলেন, তখন উল্টো পারে ছিলেন তাঁর প্রেমিক। এমনকি ওই তরুণ সেখানে কমেন্টও করছিলেন।

এর পর ওই তরুণী আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে গলায় ওড়নায় ফাঁস লাগানো মাত্রই প্রেমিক মোবাইল বন্ধ করে দেন। ভেবেছিলেন তাতেই বিষয়টি থেমে যাবে। কিন্তু, শেষমেশ ওই তরুণী আত্মহত্যা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ আত্মঘাতী মৌসুমীর মোবাইলের সূত্রেই 'আরিয়ান' নামের ওই তরুণকে গ্রেফতার করেছে। তাঁকে মঙ্গলবার বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হবে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, 'আরিয়ান' নামে ভুয়ো একটি ফেসবুক প্রোফাইল খুলেছিলেনসুমন দাস। এই আরিয়ানই যে সুমন, জানতেন না তাঁর প্রেমিকা মৌসুমী মিস্ত্রি।কিছু দিন আগে বন্ধুরাই তাঁকে জানিয়ে দেয় সুমনের এই 'কীর্তি'র কথা। তার পর থেকে, দু'জনের মধ্যে তুমুল বিবাদ। অন্য মেয়েদের সঙ্গে ফেসবুকে চ্যাট, ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারছিলেন না মৌসুমী। অনেক বার বারণও করেছিলেন সুমনকে। কিন্তু তাঁর কথায় কান দিতেন না ওই যুবক।
 
দু'জনের পাশাপাশি পাড়ায় বাড়ি। শনিবার পাড়ার জলসা থেকে ফিরে ফোনে ফের এ নিয়ে দু'জনের মধ্যে বচসা হয়। তারই মধ্যে ফেসবুক লাইভ করে মৌসুমী আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকিও দেন।লাইভ চ্যাটে তাঁর এই হুমকিকে গুরুত্বই দেননি সুমন। ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই আচমকা গলায় ওড়না জড়িয়ে ঝুলে পড়েন মৌসুমী।সেই সময় ভয় পেয়ে ফোন বন্ধ করে দেন ওই যুবক। ভেবেছিলেন, বিষয়টা কেউ বুঝতে পারবে না। কিন্তু, গোটা ঘটনাটাই ধরা ছিল মৌসুমীর ফোনে।

আত্মহত্যার জন্য মৌসুমীর পরিবার প্রথম থেকেই তাঁর বন্ধুদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছিলেন। সোনারপুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, এই আরিয়ানই সুমন দাস। লাইভ চ্যাটে ছিলেন সে। কামরাবাদ স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। কয়েক মাস আগে সুমনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন মৌসুমী। আরও কয়েক জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বেশ কিছু দিন আগে মৌসুমী মন্দিরে গিয়ে শুভ নামে একটি ছেলেকে বিয়ে করেন। পরে সুমন বিষয়টি জানতে পেরে যায়। তা নিয়েই দু'জনের মধ্যে ঝামেলা বাধে।

মৌসুমী তাঁর মা শম্পা এবং বাবা দীপক মিশ্রের সঙ্গে সোনারপুরেই থাকত৷ ঘটনার সময় রাতে বাড়ি ছিলেন না মা। বাবা ও ভাই পাশের একটি বাড়িতে থাকতেন। সকালে মৌসুমীকে ডাকতে গিয়ে, ভাই দেখেদিদি সিলিংয়ের সঙ্গে ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে৷ পায়ের কাছে পড়ে আছে মোবাইলটি৷