বিধবা বউদির জীবন সাজাতে এগিয়ে এলেন দেওর, আদিবাসী সমাজে অভিনব গণবিবাহ


আদিবাসী সমাজে এমনও অনেক দম্পতি রয়েছেন, যাঁরা পয়সার অভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে পারেননি। বিনা বিয়েতেই সংসার করে দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন।


আদিবাসী সমাজে অভিনব গণবিবাহ!
দুরারোগ্য ব্যাধিতে দাম্পত্যের প্রথম এক বছরেই মারা গিয়েছেন স্বামী। অসহায় বউদিকে বাঁচাতে ঘর বাঁধতে এগিয়ে এসে হাত ধরেছেন দেওর অথবা গ্রামেরই অন্য কোনও যুবক। কিন্তু আদিবাসী সমাজ তাতে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। অগ্যতা, বিনা বিবাহে দু'জনে এক সঙ্গে ঘর বেঁধে দিব্যি সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন।

আদিবাসী সমাজে এমনও অনেক দম্পতি রয়েছেন, যাঁরা পয়সার অভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে পারেননি। বিনা বিয়েতেই সংসার করে দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন। সামাজিক ভাবে এক প্রকার বয়কটের শিকার এই দম্পতিদের স্বীকৃতি দিতে গণবিবাহ অনুষ্ঠিত হলো দক্ষিণ দিনাজপুরের জলঘর এলাকায়। স্থানীয় ধারাইল গ্রামের আদিবাসী জনতা সংঘের সদস্যরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে রাজ্যে প্রথম অভিনব এই গণবিবাহের আয়োজন করেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকার অবিবাহিত মোট সাত জোড়া দম্পতিকে চিহ্নিত করে তাঁদের বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ করলেন।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই অভিনব গণবিবাহকে ঘিরে রীতিমত উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়েছে অখ্যাত ধারাইল গ্রামে। জলঘর ও তার আশপাশের এলাকায় সমস্ত সম্প্রদায়ের হাজারেরও উপর মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়ে বর-কনেদের আশীর্বাদ করেন। উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা-ও।

আদিবাসী সমাজের ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে দুপুর থেকেই বিরাট আয়োজন করা হয়। বটতলায় ধামসা-মাদলের তালে আদিবাসী রমণীদের নাচ ও গানের আসর জমে ওঠে। ডালিতে বসিয়ে কাঁধে করে কনেকে বরের সামনে এনে শুভদৃষ্টি ও সিঁদুর দান-সহ অন্যান্য রীতিরসম সম্পন্ন হয়।  সেই সঙ্গে ছিল বর ও কনে পক্ষের লোকেদের পাশাপাশি অতিথিদের ভোজের ব্যবস্থাও।