লালবাজারের কাছেই গুন্ডা দিয়ে মার পুলিশকর্মীকে, অভিযুক্ত স্ত্রী


সৌরাঙ্কি সরকার ও সৌম্যজিত্ সরকার। সৌম্যজিতকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সৌরাঙ্কির বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।

ভাড়াটে গুন্ডা নিয়ে এসে পুলিশ স্বামীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তাঁরই স্ত্রীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে লালবাজার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বউবাজারের কাছে ঘটনাটি ঘটে।

রাত তখন প্রায় ৮টা। কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন চিত্পুরের বাসিন্দা সৌম্যজিত্ সরকার। লালবাজারে হোমগার্ডের কাজ করেন তিনি। তাঁর দাবি, বউবাজারের কাছাকাছি আসতেই আচমকা বেশ কয়েক জন লোক তাঁকে ঘিরে ধরেন। প্রথমে বিষয়টা ঠাওর করতে পারেননি তিনি। কেন তাঁকে এ ভাবে ঘিরে ধরা হয়েছে বিষয়টা বুঝতে অবশ্য বেশি সময় লাগেনি তাঁর।

তত ক্ষণে তাঁকে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিয়েছেন ওই লোকগুলো। কিছু বলতে যাবেন, এমন সময়ই শুরু হয় এলোপাথারি মারধর। সেই অবস্থাতেই তিনি দেখতে পান ওই লোকগুলোর কাছাকাছি দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী সৌরাঙ্কি। বিষয়টা তখন জলের মতো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল সৌম্যজিতের কাছে। ভাড়াটে গুন্ডা নিয়ে এসে স্ত্রী-ই তাঁকে মারধর করাচ্ছেন! কোনও রকমে সেখান থেকে পালিয়ে তিনি চলে আসেন লালবাজারে। জামাকাপড় ছেঁড়া, বিধ্বস্ত অবস্থায় তাঁকে দেখে সহকর্মীরা চমকে যান। সৌম্যজিত্ তাঁদের গোটা ঘটনাটাই জানান। এর পর তাঁরাই হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁকে। বউবাজার থানায় স্ত্রী ও কয়েক জনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

২০১৬-র ৯ ডিসেম্বর সৌম্যজিতের বিয়ে হয়েছিল পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা সৌরাঙ্কির সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই তাঁদের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। এ নিয়ে দু'পক্ষ চিত্পুর থানায় অভিযোগও দায়ের করেছিলেন। সৌম্যজিতের অভিযোগ, গত মার্চে তাঁর স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে পাণ্ডুয়ায় চলে যান। এত দিন সেখানেই থাকছিলেন তিনি। ওই দিন রাতে তাঁকে শায়েস্তা করতে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে এসে মারধর করেন। যদিও সৌরাঙ্কি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "আমি পাণ্ডুয়াতে ছিলাম। এ ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নই।" পাল্টা সৌম্যজিত্ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সৌরাঙ্কি বলেন, "গত তিন মাস ধরে ওঁরা আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না। এমনকী মারধরও করেছে আমাকে।"

পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে একটা অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।