মাধ্যমিকে ভাল ফল করায় স্মার্টফোন, ছাত্রীর আত্মহত্যার কারণ হল সেটাই


আত্মঘাতী ছাত্রী আরহাম রহমত।

সারা দিন ধরে মেয়ে মোবাইলে ব্যস্ত। রোজই এই নিয়ে মায়ের সঙ্গে চলছিল অশান্তি। আর তারই জেরে আত্মঘাতী হল একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। কলকাতার বেনিয়াপুকুর এলাকায়।

শনিবার বিকেলে স্ত্রী মাঝাহবিন আরাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন বেনিয়াপুকুরের রামেশ্বর সাউ রোডের বাসিন্দা সেখ রফিকুতুল্লা। রাতে ফিরে এসে দেখেন, মেয়ের ঘরের দরজা ভেজানো। বার বার ডাকার পর কোনও সাড়া না পাওয়ায় দরজা খুলে মেয়েকে গলায় ওড়নার ফাঁস জড়িয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান দম্পতি। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে ফাঁস খুলে নামিয়ে আনেন। ডাকা হয় চিকিৎসককে।

স্থানীয় চিকিৎসক কিশোরীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর দেওয়া হয় বেনিয়াপুকুর থানায়। পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই সামনে আসে মোবাইল নিয়ে মায়ের সাথে কিশোরীর বচসার কথা।

একাদশ শ্রেণির আরহাম রহমত বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনের ছাত্রী। মাধ্যমিকে ভাল ফল করায় তাকে অ্যানড্রয়েড ফোন কিনে দিয়েছিলেন তার দাদা। আর সেই মোবাইল নিয়েই শুরু হয়ে যায় অশান্তি। আরহামের মায়ের অনুযোগ, ফোন হাতে পাওয়ার পর থেকেই সারা দিন ওটা নিয়ে ব্যস্ত থাকত মেয়ে। পড়াশোনায় উঠে গিয়েছিল মন। সবসময় বিভিন্ন অ্যাপ-এ ঘোরাফেরা করতে, চ্যাট করত। আর তা নিয়েই মায়ের সঙ্গে রোজকার গণ্ডগোল শুরু হয়।

কয়েকদিন আগেই দাদা কলকাতায় ফেরেন। তিনি এই অশান্তি দেখে আরহামের কাছ থেকে ফোনটি নিয়ে নেন এবং মায়ের কাছে রেখে দেন। আর সেই সময় থেকেই মনমরা হয়ে ছিল আরহাম।

তার বাবা বলেন, "ওর মন খারাপ থাকায়, আমার জামাই ওকে কসবায় দিদির কাছে নিয়ে যায়। সেখানেই তিনদিন ছিল। শনিবারই দিদির কাছ থেকে ফেরে।"

আরহামের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরাও নিশ্চিত, ফোনের জন্যই অভিমানে আত্মঘাতী এই কিশোরী। কিন্তু তার বাইরে অন্য কোনও কারণে আরহাম অবসাদে ভুগছিল কী না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।