১৫১ বছর লাগবে সাড়ে ৬ লক্ষ ভারতীয়ের গ্রিন কার্ড পেতে!


খিল পড়েছে আমেরিকার সিংহদুয়ারে!
লক্ষ লক্ষ উচ্চশিক্ষিত ভারতীয়ের 'গ্রিন কার্ড'-এর আবেদন আটকে রয়েছে বিধিনিষেধের 'রেড সিগন্যাল'-এ।

আমেরিকায় পড়তে বা কাজ করতে গিয়ে সেখানে পাকাপাকি ভাবে থেকে যেতে চান, এমন প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ উচ্চশিক্ষিত ভারতীয়ের এখন একটাই জিজ্ঞাসা, ''লাল বাতি সবুজ হবে?''

বিশেষজ্ঞদের দাবি, সেই 'লাল বাতি' সবুজ হতে সময় লাগবে অন্তত ১৫১ বছর। মানে, দেড় শতাব্দী!

মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন দফতর (ইউএসসিআইএস)-এর দেওয়া হালের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে ওয়াশিংটনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সংস্থা 'ক্যাটো ইনস্টিটিউট' জানাচ্ছে, এ বছরের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আমেরিকায় পড়তে বা চাকরি করতে গিয়ে পাকাপাকি ভাবে থেকে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন ৬ লক্ষ ৩২ হাজার ২১৯ জন ভারতীয়। এঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রচুর মহিলা ও শিশু। প্রত্যেকেই উচ্চশিক্ষিত বা মার্কিন মুলুকে যেতে চান উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে।

'রেড সিগন্যাল'টা কোথায়?
বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে ফি বছরে কত শতাংশ গ্রিন কার্ড ইস্যু করা হবে, সেই হিসেবই উদ্বেগের মূল কারণ। যাব বললেই তো যাওয়া যায় না মার্কিন মুলুকে! বিভিন্ন ক্যাটেগরির গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য বছরে বিভিন্ন দেশের জন্য একটি নির্দিষ্ট শতাংশের হিসেবে দেওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের গ্রিন কার্ড।

আরও পড়ুন- দু'পায়ে হাঁটা সহজ কথা নয়​
মার্কিন মুলুকে এই অভিবাসীদের দেওয়া হয় 'ইবি-ওয়ান' শ্রেণির গ্রিন কার্ড। এই কার্ড দেওয়া হয় উচ্চ মেধা ও সেরা প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য। মার্কিন মুলুকে যাকে বলা হয়, 'একস্ট্রাঅর্ডিনারি এবিলিটি'। শ্রেণির ওই নামকরণের কারণ, মূলত আমেরিকায় চাকরি পাওয়ার ভিত্তিতেই দেওয়া হয় এই 'ইবি-ওয়ান' বা 'এমপ্লয়মেন্ট বেস্‌ড' গ্রিন কার্ড।

মার্কিন মুলুকের এই 'পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি কার্ড' পেতে ওই ভারতীয় আবেদনকারীদের সময় লাগবে কম করে ১৫১ বছর। গত বছর ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশিদের জন্য যত 'গ্রিন কার্ড' ইস্যু করেছে, তারই ভিত্তিতে এই পূর্বাভাস মার্কিন সংস্থাটির।

কত রকমের গ্রিন কার্ড ইস্যু করা হয়?
এই 'ইবি' শ্রেণির গ্রিন কার্ডের বিভিন্ন ক্যাটেগরি আছে। যাঁরা ভারতে স্নাতকোত্তর বা গবেষণা শেষ করেছেন খুব ভাল রেজাল্ট নিয়ে, তাঁদের দেওয়া হয় 'ইবি-ওয়ান' শ্রেণির গ্রিন কার্ড। ইউএসসিআইএস-এর পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই তালিকায় রয়েছেন মোট ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন ভারতীয়। 'ক্যাটো ইনস্টিটিউট' বলছে, এঁদের প্রথম জনকে মার্কিন মুলুকের গ্রিন কার্ড পেতে অপেক্ষা করতে হবে অন্তত ৬ বছর।
আর যাঁরা স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় খুব ভাল রেজাল্ট করে আমেরিকায় গিয়ে চাকরি করতে বা উচ্চতর স্তরে পড়াশোনা করতে চান, তাঁদের দেওয়া হয় 'ইবি-থ্রি' শ্রেণির গ্রিন কার্ড। এ বছরের ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই ধরনের আবেদনকারীর সংখ্যা ১ লক্ষ ১৫ হাজার ২৭৩ জন। 'ক্যাটো ইনস্টিটিউট' বলছে, এঁদের প্রথম জনকে মার্কিন মুলুকের গ্রিন কার্ড পেতে অপেক্ষা করতে হবে অন্তত ১৭ বছর। তবে গত বছর যত জন ভারতীয় এই ক্যাটেগরির গ্রিন কার্ড পেয়েছেন, সেই নিরিখে সময় লাগবে ৬৫ বছর।

রয়েছে আরও একটা ক্যাটেগরি। 'ইবি-টু'। যাঁরা স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা পাশ করেছেন, তবে রেজাল্ট ততটা ভাল নয়, মার্কিন মুলুকে তাঁদের দেওয়া হয় 'ইবি-টু' শ্রেণির গ্রিন কার্ড। ইউএসসিআইএস-এর পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই তালিকায় রয়েছেন মোট ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩৬৮ জন ভারতীয়। 'ইবি-টু' ভারতীয়দের ক্ষেত্রে দেওয়া হয় বছরে ৭ শতাংশ।