শেষ মুহূর্তে দুরন্ত গোলে জার্মানিকে জেতালেন খোস, লড়াই ব্যর্থ সুইডেনের


মিসাইল: শেষ মুহূর্তে সুইডেনের গোলে আছড়ে পড়ল টোনি খোসের (৮) শট। স্বস্তি পেল জার্মানি।

জার্মানি ২ • সুইডেন ১

অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন। জার্মানি মানেই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। শেষ বাঁশি না-বাজা পর্যন্ত হাল না-ছাড়া। রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচেই স্বমহিমায় জার্মানি।

মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে জার্মানিকে হারতে দেখে অবাকই হয়েছিলাম। এ কোন জার্মানি? চার বছর আগের দলের অনেকেই রয়েছেন। অথচ কী আশ্চর্য পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে! গতি অনেক কমে গিয়েছে।

আত্মবিশ্বাসের অভাবও স্পষ্ট। পার্থক্য আরও বেশি করে চোখে পড়ার কারণ হচ্ছে, ২০০৬ সালে ওয়াকিম লো দায়িত্ব নিয়ে জার্মানির ফুটবল সংস্কৃতিটাই বদলে দিয়েছেন। প্রচণ্ড গতিতে নিজেদের মধ্যে পাস খেলতে খেলতে বিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে গোল করেন মুলাররা। আগে জার্মানির ফুটবলারদের খেলাটা ধরন ছিল— উইং দিয়ে আক্রমণে উঠে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে দাঁড়িয়ে থাকা স্ট্রাইকারের উদ্দেশে বল ভাসিয়ে দেওয়া। লো কোচ হওয়ার পরেই ফুটবল বিশ্ব দেখল, কী ভাবে প্রচণ্ড গতিতে তিকি-তাকা খেলতে হয়। প্রথম ম্যাচে জার্মানির খেলা থেকে গতিটাই যেন হারিয়ে গিয়েছিল। আসলে যে দু'জনের জন্য বিশ্ব-ফুটবলে জার্মানির শাসক হয়ে ওঠা, তাঁরা কেউ দলে নেই। প্রথম জন ফিলিপ লাম অবসর নিয়েছেন চার বছর আগে ব্রাজিল বিশ্বকাপে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করে। আর এক জন বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগার ফুটবলকে বিদায় না জানালেও জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন। এঁদের বিকল্প যে এখনও খুঁজে পাননি লো। শনিবার জয়ের সঙ্গে সেই গতিও ফিরল জার্মানির খেলায়।

প্রথম ম্যাচেই হাভিয়ের হার্নান্দেজ (চিচারিতো)-রা দেখিয়ে দিয়েছিলেন, জার্মানির দুর্বলতা। শনিবার সুইডেনও একই ছকে খেলল। জার্মানির আক্রমণ সামলে কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করার চেষ্টা করা। প্রথমার্ধেই সফল ওদের পরিকল্পনা। ৩২ মিনিট কাউন্টার অ্যাটাক থেকেই গোল করে সুইডেনকে এগিয়ে দেন ওলা তোইভোনেন। কেন লো-কে বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ বলা হয়, দ্বিতীয়ার্ধে দেখিয়ে দিলেন। আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে মিডফিল্ডার জুলিয়ান ড্রাক্সলারের পরিবর্তে নামালেন স্ট্রাইকার মারিয়ো গোমেজকে। কিন্তু ৮২ মিনিটে লাল কার্ড (দ্বিতীয় হলুদ কার্ড) দেখে লো-র অস্বস্তি আরও বাড়ালেন জেহোম বোয়াটেং। অনেকের মনে হয়েছিল, আর কোনও সম্ভাবনা নেই জার্মানির। আমি কিন্তু জানতাম, যে কোনও মুহূর্তে ছবিটা বদলে যাবে। বাস্তবে সেটাই হল। শেষ মুহূর্তে অবিশ্বাস্য গোলে জার্মানিকে জেতালেন টোনি।