কুড়ি দিনের আলাপেই ‘লাইভ’ আত্মহত্যা! নাকি একাধিক সম্পর্কেই কি হতাশ মৌসুমী?


ধৃত আরিয়ান। (ডানদিকে) আত্মঘাতী মৌসুমী।

ফেসবুক লাইভে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আরিয়ানকে গ্রেফতার করল সোনারপুর থানার পুলিশ। সোমবার রাতে সোনারপুর থানার খুঁড়িগাছি এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

শনিবার রাতে প্রেমিক আরিয়ানের সঙ্গে ফেসবুকে লাইভ চ্যাটিংয়ের মাঝেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে মৌসুমী মিস্ত্রি নামে ওই ছাত্রী। ফেসবুকেই রেকর্ড হয়ে যায় মৌসুমীর আত্মহত্যার ঘটনা। ফেসবুক থেকে আরিয়ানের পরিচয় পাওযার পরেই ওই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল মৌসুমীর পরিবার।

অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ জানতে পারে, ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পরে এই খুঁড়িগাছি এলাকায় মামার বাড়ি থেকেই পড়াশোনা করত আরিয়ান। তবে পুলিশ সুত্রে খবর, আরিয়ান নয় অভিযুক্তের আসল নাম সুমন দাস। সোনারপুর থানার কামারাবাদ হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এই ছাত্র আরিয়ান নামে ফেক ফেসবুক আইডি খুলেই চ্যাট করত অভিযুক্ত সুমন দাস। ধৃতকে মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, মাত্র দিন কুড়ি আগে এই সুমনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় মৌসুমীর। ঘটনার দিন রাতেও হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুকে একাধিক বার সুমনের সঙ্গে ওই ছাত্রীর কথা হয়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, একাধিক ছেলের সঙ্গে ওই ছাত্রীর যোগাযোগ ছিল। অন্য এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছিল। মাস কয়েক আগেও আরও একবার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল মৌসুমী। সেবার অবশ্য বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে যায় সে।

মৃতার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে একটি ডায়েরিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতার মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাটিংয়ের সময়ে অভিযুক্তকে একাধিক বার আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিল মৌসুমী। কিন্তু বিষয়টি এতটা সিরিয়াস ভাবে নেয়নি সুমন। তার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অনুমান পুলিশের। তবে পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার সঙ্গে আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। এ দিন বারুইপুর আদালতে পেশ করে সুমনের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করেছে পুলিশ।