এইডস আক্রান্ত রোগীকে নদীর চরে ফেলে গেল পরিবার, চাঞ্চল্য কোচবিহারে


কোচবিহার: রক্ত পরীক্ষায় এইচআইভি পজিটিভ মিলেছে। এই খবর পেয়েই আতঙ্কিত পরিজনেরা রাতের অন্ধকারে রোগীকে ফেলে গেল নদীর চরে। এমনই অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে চাঞ্চল্য ছড়ায় তুফানগঞ্জ-এক ব্লকের মারুগঞ্জ এলাকায়। খবর পেয়ে ব্লক প্রশাসনের তৎপরতায় ওই রোগীকে উদ্ধার করে নাটাবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভরতি করানো হয়েছে। এইডস নিয়ে সচেতনতামূলক একাধিক প্রচার হয়েছে। তারপরও এই অমানবিক ঘটনা একাধিক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। দাবি উঠেছে কড়া পদক্ষেপের। তবে রোগীর  চিকিৎসার আশ্বাস দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর।

এই প্রসঙ্গে তুফানগঞ্জ-এক ব্লকের বিডিও শুভজিৎ দাসগুপ্ত বলেন,  "রোগীর শরীরে এইচআইভি ভাইরাস রয়েছে। জানতে পেরেই পরিজনরা রোগীকে মারুগঞ্জের সোলডাঙা এলাকায় নদীর চরে ফেলে আসেন। খবর পাওয়া মাত্র রোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছে।"  জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,  "এইচআইভি ছোঁয়াচে নয়। ভয়ের কিছু নেই। পরিবারের লোকজন সচেতনতার অভাবে যে কাজ করেছেন সেটা ঠিক নয়। ওই এলাকায় প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।"

এদিন নাটাবাড়ি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই রোগী জানান,  দীর্ঘদিন হল বাবা-মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর তিনি মহারাষ্ট্রে কাজের খোঁজে গিয়েছিলেন। ২০০৭ নাগাদ সেখানেই অসুস্ত হয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর এইডস হয়েছে। এরপর সেখান থেকে ফিরে দিদার কাছে থাকতে শুরু করেন। কিছুদিন আগে দিদারও মৃত্যু হলে মামাবাড়িতে চলে যান। কিন্তু রোগের কথা জানাজানি হতেই মামাতো ভাইরা তাঁকে বাড়িতে রাখতে চাননি। রাতে তুলে নদীর চরে ফেলে আসেন। এরপর প্রশাসনের তরফে রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

ডাউয়াগুড়ি এলাকার বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান চন্দন কার্জি এ সম্পর্কে বলেন,  "কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল সেটা খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" একজন রোগীকে রাতের অন্ধকারে নদীর চরে ফেলে দেওয়ার ঘটনাকে মানতে পারছেন নানা এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও উঠেছে।