কার্বাইড-পাকা ফল বিক্রি বন্ধ অসমে, ধাক্কা বঙ্গেও


ফল পরীক্ষা: গুয়াহাটির বাজারে।

রাজ্যে কার্বাইডে পাকানো ফলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে অসমের স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী পীযুষ হাজরিকার নেতৃত্বে খাদ্য সুরক্ষা দফতরের কর্তারা গুয়াহাটির বিভিন্ন বাজার ও গুদামে ঘুরে ফল ও দুধের মান পরীক্ষা করছেন। হাতেনাতে ১৫ কুইন্টাল কার্বাইডে পাকানো আম ধরেছেন। সব আম নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। একই ভাবে আজ গুয়াহাটির কলা গুদামে হানা দিয়ে ১৯২ কাঁদি কলা বাজেয়াপ্ত করা হয়। গুদামেই মিলেছে প্রচুর কার্বাইড।

এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার থেকে কাঁচা বা আধপাকা আম আমদানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
অসমের আম ব্যবসায়ীরা জানান, মরশুমের শুরুতে অসমে আম আসে দক্ষিণ ভারত থেকে। পরে আসে মূলত, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার থেকে। কলা মূলত রাজ্যেরই ফল। কিছু কলা আসে মেঘালয় থেকে। আম-কলা গুদামে রাখার পরে ক্যালসিয়াম কার্বাইডের সাহায্যে তা পাকিয়ে দোকানে দোকানে পাঠানো হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্তাদের মতে, কার্বাইডে পাকানো আম-কলা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। তার জেরে চামড়ার ক্যানসার, পেটের ক্যানসার ও অন্যান্য রোগ হতে পারে। পাকা ফলের গা থেকে বেরনো জলীয় বাষ্পের সঙ্গে বিক্রিয়া করে কার্বাইড। তাতে অ্যাসিটিলিন গ্যাস তৈরি হয়। যা ফলকে পাকিয়ে দেয়। বিষাক্ত ওই গ্যাস মানব কোষের ক্ষতি করে।

মন্ত্রী পীযূষ বলেন, ''আমি নিজে বাজারগুলিতে হানা দিয়ে প্রচুর আম, কলা ধরেছি। উদ্ধার করেছি কার্বাইড।'' তিনি জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত রাজ্যের কোনও বাজারে এমন ভাবে পাকানো ফল বিক্রি করা চলবে না। পশ্চিমবঙ্গের ফল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অসম এ রাজ্যের আমে 'নিষেধাজ্ঞা' জারি করেছে। পীযূষ বলেন, ''আমরা অসমে কোনও রাজ্য থেকে ফল আনায় নিষেধাজ্ঞা চাপাইনি। কিন্তু ফল এ ভাবে পাকিয়ে বিক্রি করা চলবে না। ফল সিন্ডিকেট ও খুচরো ব্যবসায়ীদের অসাধু উপায়ে পাকানো ফল বিক্রি বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নেবে সরকার।''

অসমের একাধিক ফল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের করা হয়েছে। জাগিরোড থেকেও বাজেয়াপ্ত হয়েছে এক ট্রাক আম। ভিতরে ছিল কার্বাইড। ট্রাকটি পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছিল। সব আম নষ্ট করে ফেলা হয়। ধুবুড়িতে দেড়শো বাক্স আম ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ে রাজ্যের ফল সিন্ডিকেট আপাতত ভিন্‌রাজ্য থেকে আম আমদানি বন্ধ রেখেছে।