স্মার্টফোনকেই মাইক্রোস্কোপ বানিয়ে ফেলল খুদে পড়ুয়ারা


খুদেদের তৈরি স্মার্টফোন মাইক্রোস্কোপ।

এ বার থেকে বাড়িতে বসেই ম্যালেরিয়া এবং ফাইলেরিয়ার মতো রোগজীবাণুর হদিস পাওয়া যাবে।

কী ভাবে?
অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই হাতের মুঠোয় চলে আসছে জলজ্যান্ত এক অণুবীক্ষণ যন্ত্র।

আসলে খুদে ছাত্রদের তৈরি এটি। যন্ত্রটির নাম 'স্মার্টফোন মাইক্রোস্কোপি'।

স্মার্টফোনেই রোগজীবাণুর হদিস দিয়ে নজর কেড়েছে বসিরহাট হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্র আত্রেয় মণ্ডল এবং নীপতনু নাথ।
সম্প্রতি হয়ে গেল জেলা ছাত্র–যুব বিজ্ঞান প্রদর্শনী। সেখানে আত্রেয় এবং নীপতনু মিলে এই মডেলের জন্য প্রথম পুরস্কারও পেয়েছে। 'আমার হাতে আমার বিজ্ঞান' শিরোনামে তারা মানুষের কাছে তুলে ধরছে তাদের মডেল। মডেলটি দর্শকদের কাছে প্রশংসিতও। স্কুলপড়ুয়াদের এই সাফল্যে খুশি স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন রায়। তিনি বলেন, ''সকলকে অবাক করে দিয়েছে দুই খুদে বিজ্ঞানী আত্রেয় ও নীপতনু। তাদের তৈরি জেলায় আমাদের প্রথম স্থান পেতে সাহায্য করেছে বলে আমরা গর্বিত।''

দুই খুদে ছাত্রের কথায়, তাদের তৈরি যন্ত্রে যে কোনও আণুবীক্ষণিক বস্তুই ধরা পড়বে। সিডি প্লেয়ারের বাতিল লেন্স দিয়ে তৈরি এই যন্ত্রের অবজেকটিভ। মোবাইলের লেন্সকে 'আইপিস' হিসাবে ব্যবহার করে অবজেকটিভের নীচে স্লাইড রাখলে ছোট বস্তুকে কয়েক গুণ বড় দেখাবে। এ ক্ষেত্রে আলোর উৎস হিসাবে চাই কালো মোটা কাগজে মোড়া পিচবোর্ডের চৌকো বাক্সের মধ্যে রাখা এলইডি আলো। প্রত্যন্ত গ্রামের পড়ুয়ারাও যন্ত্রটি সহজেই বানাতে পারবে বলে জানায় দুই খুদে পড়ুয়া।

যন্ত্রটি উদ্ভাবনের কাজে আত্রেয়-নীপতনুকে সাহায্য করেছেন দন্ডিরহাট হাইস্কুলের শিক্ষক নীরজ নাথ এবং বসিরহাট হাইস্কুলের শিক্ষক তীর্থ মণ্ডল। তাঁরা জানান, ''নতুন এই যন্ত্র বিজ্ঞানের পড়ুয়াদের খুবই উপকারে আসবে।'' তাঁদের আরও দাবি, জীবনবিজ্ঞানের যে সব পাঠ্য বিষয় চাক্ষুষ করতে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের দরকার হয়, এখন থেকে তা মোবাইলের মাধ্যমেই দেখা যাবে।

স্মার্টফোনের অপব্যবহার যখন অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক সেই সময়ে আত্রেয়–নীপতনুর এই সাফল্য স্মার্টফোনের সুফলের দিকটাও সকলের সামনে তুলে ধরল বলে মনে করা হচ্ছে।