ত্রিপুরায় বন্যায় গৃহহীন ৩৫০০ পরিবার


আগরতলা: টানা বৃষ্টি চলছে ত্রিপুরায়৷ গত ২৪ ঘন্টায় মুষলধারায় বৃষ্টি হওয়ার ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা। প্রায় ৩৫০০ পরিবার গৃহহীন৷ তাদের ঠাঁই দেওয়া হয়েছে আশ্রয় শিবিরে৷

বুধবার সকালেই প্রায় ৫০০ পরিবার বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে খোঁজে বেরিয়ে পড়ে৷ খারাপ অবস্থায় রয়েছে পশ্চিম ত্রিপুরার সদর সাব ডিভিশন৷

সদরের সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তপন কুমার দাস জানিয়েছেন বন্যার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকছে৷ এখনই বেশিরভাগ ঘরবাড়ি জলের তলায়৷

ত্রিপুরা প্রশাসন সূত্রের খবর, বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। উত্তর ত্রিপুরার পার্বত্য এলাকাতেও জলের স্তর বাড়তে শুরু করেছে। সেখান থেকে আশ্রয়শিবিরে সরানো হচ্ছে বাসিন্দাদের৷

অসম-আগরতলা জাতীয় সড়ক বন্যায় জলের তলায় ছিল৷ মঙ্গলবার জল কিছুটা নামতে রাস্তা পরিস্কারের কাজ শুরু হয়৷ এতদিন মুখ থুবড়ে পড়েছিল ট্রাফিক ব্যাবস্থা৷ বুধবার থেকে যান চলাচল শুরু হয়েছে৷ তবে তা স্বাভাবিক নয়৷ খুব ধীরে যান চলাচল করছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর৷ আথারামুড়া পার্বত্য এলাকা থেকে ধসের কারণেও এই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়৷

আরও বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর৷ ফলে বিপর্যয় বাড়বে৷ সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছেন প্রশাসন সব ধরণের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে৷ মজুত রয়েছে ত্রাণ৷

সব স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৮৯টি আশ্রয়শিবিরে বন্যাদুর্গত তিন হাজার পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, দমকল, অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতর এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো যৌথ উদ্যোগে কাজে নেমেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ৷

উনাকোটি জেলার কুমারঘাট ও পানিসাগর এলাকা, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সাবরুম এলাকা, গোমতি জেলার অমরপুর এলাকা এবং খোয়াই জেলার তেলিমাউরা এলাকায় পরিস্থিতি সবচেয়ে শোচনীয়৷ ক্ষতি হয়েছে ফসলের৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বন্যায় আক্রান্ত পরিবারগুলোকে সব ধরনের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

প্রশাসনিক আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করছেন৷ জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী গোটা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রেখেছেন৷ খবর নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তিনি প্রতিটি দফতরকে নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছেন বন্যায় আক্রান্ত মানুষকে সব ধরনের সাহায্য করার জন্য।