ভারত মহিলাদের জন্যে কতটা নিরাপদ? কী বলছে সমীক্ষা, শুনলে চমকে যাবেন


নয়াদিল্লি:  ভারত মহিলাদের জন্যে অন্যতম বিপজ্জনক দেশ। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যেভাবে এখানে নারীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় এবং নানা ভাবে মহিলাদের শোষণ করা হয়, তার জন্যে ভারত মহিলাদের জন্যে মোটেই নিরাপদ নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে মহিলাদের জন্যে ভারত বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন এবং তালিকায় ধীরে ধীরে ওপরের দিকে পৌঁছেছে। প্রসঙ্গত, এই নির্যাতন বন্ধের জন্যে তেমন কোনও পদক্ষেপই নিচ্ছে না সরকার। এবিষয়ে ২০১২ সালের চলন্ত বাসে দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সেই ঘটনার পর দোষী সাব্যস্তদের এমন কোনও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়নি, যার প্রভাবে মহিলাদের ওপর ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, শারীরিক নির্যাতনের পরিমাণ এতটুকু কমেছে বলে দাবি করা যাবে। উল্টে অত্যাচারের পরিমাণ বেড়েই চলেছে প্রতিদিন।

মহিলাদের উদ্দেশ্যে সেভাবে কোনও সম্মান, শ্রদ্ধা দেখানো হয় না ভারতে। শুধু বাইরে নয়, ঘরের মধ্যেও বাবা, দাদা, কাকা, স্বামী, শ্বশুর, দেওর, ভাসুরের হাতে লাঞ্ছিত মহিলারা। ক্রমবর্ধমান কন্যা ভ্রুণ হত্যার পরিমাণও। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে মহিলাদের ওপর অত্যাচারের পরিমাণ ৮৩ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এখন সারা দেশে প্রতি এক ঘণ্টায় চারজন করে নারী ধর্ষণের শিকার হয়।

এর আগে ২০১১ সালে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সেখানে দেখা যায় মহিলাদের জন্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশে হিসেবে তালিকার একেবারে শীর্ষে রয়েছে আফগানিস্তান। তারপর ছিল কঙ্গো, পাকিস্তান, ভারত এবং সোমালিয়ার নাম।

বর্তমান সমীক্ষাটি চালানো হয় যাঁদের ওপর তাঁদের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, রাষ্ট্রপুঞ্জের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে কোন দেশ মহিলাদের জন্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে তাঁরা মনে করেন? এছাড়াও তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, নারী পাচার এবং মহিলাদের ওপর যৌন হয়রানির দিকেও তাঁরা কোন দেশকে এগিয়ে রাখছেন? শুধু মহিলাদের থাকার জন্যেই বিপজ্জনক নয় ভারত, নারী পাচার, যৌনদাসী করে রাখার ক্ষেত্রেও এগিয়ে ভারত। এই সমীক্ষা রিপোর্ট সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেনি কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক।

সমীক্ষাটি চালানো হয়েছিল অনলাইনে, ফোনে এবং মুখোমুখি গিয়ে কথা বলে। এবছর মার্চের ২৬ থেকে ৪ মে সমীক্ষাটি চালানো হয়। মতামত দিয়েছিলেন পেশাদার, শিক্ষাক্ষেত্র, স্বাস্থ্য, বেসরকারি ক্ষেত্র, সমাজকর্মী থেকে শুরু করে নানা সেক্টরের লোকজন।