আঘাত ঠোঁটে, যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচারের জন্য শিশুকে ক্যাথিটার পরালেন চিকিৎসক


হাওড়া: এক শিশুর অস্ত্রোপচার। ভুল করে অপর এক শিশুকে তোলা হল অস্ত্রোপচারের টেবিলে। যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচারের জন্য ইঞ্জেকশনও দেওয়া হল তাকে। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পেল শিবম শর্মা নামে পাঁচ বছরের শিশুটি। শিশুটির বাবা চিৎকার করতেই বিষয়টি নজরে আসে চিকিৎসকের। মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখে বুঝতে পারেন ওই চিকিৎসক। তিনি বুঝতে পারেন যে শিশুর যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা সেই শিশু সেখানে নেই। অস্ত্রোপচার করতে যাওয়া চিকিৎসক তখন ক্ষমা চেয়ে নেন শিশুটির পরিবারের কাছে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় উত্তর হাওড়ার টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে। মঙ্গলবার এই ঘটনার পর বুধবার শিবমের পরিবারের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির বিরুদ্ধে হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাসের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

সোমবার ২৬ নম্বর বেলুড় রোডে মামার বাড়িতে খেলতে খেলতে পড়ে গিয়ে ঠোঁটে আঘাত পায় শিবম। স্থানীয় জয়সওয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেদিন তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। বলা হয় মঙ্গলবার হাসপাতালের কোনও শল্য চিকিৎসককে দেখিয়ে নিতে। শিবমের পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার তাকে জয়সওয়াল হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক মহিলা চিকিৎসক কিছু শোনার আগেই তাকে অস্ত্রোপচারের ঘরে পাঠিয়ে দেন। সেই ঘরে ঢোকার কিছুক্ষণ পরই শিবম চিৎকার করতে থাকে। শিবমের বাবা  ছুটে গিয়ে দেখেন তাঁর ছেলের যৌনাঙ্গে ক্যাথিটার লাগানো রয়েছে। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শিবমের বাবা চিৎকার করতেই শিশুটিকে অস্ত্রোপচারের টেবিল থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। চিৎকার চেঁচামেচি করতেই অস্ত্রোপচারের ঘরে থাকা এক শল্য চিকিৎসক শিবমের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।

ওই শিশুর মামা অঙ্কিত শর্মা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আসা অন্য এক শিশুর যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। শিবমকে সেই শিশু ভেবে অস্ত্রোপচারের টেবিলে তুলে দেওয়া হয়। শিবমের বাবার চিৎকার চেঁচামেচিতে তাকে অস্ত্রোপচারের টেবিল থেকে নামানো হয়। না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেত বলে জানিয়েছেন অঙ্কিতবাবু। প্রসঙ্গত, শিবমরা রাজস্থানে থাকে। গরমের ছুটি কাটাতে বেলুড়ে মামার বাড়িতে বেড়াতে এসেছে সে। সেখানেই খেলতে গিয়ে ঘটল এই দুর্ঘটনা। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পাশাপাশি এই ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে বেলুড় থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেছেন শিবমের পরিবার। জয়সওয়াল হাসপাতালের সুপার সুখেন্দু বিশ্বাস এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।