ফের ব্লগার খুন বাংলাদেশে


নিহত শাহজাহান বাচ্চু
     
ঢাকা : বাংলাদেশে ফের এক ব্লগারকে গুলি করে খুন করা হল। মৃতের নাম শাহজাহান বাচ্চু। গতকাল সন্ধে নাগাদ ঢাকার সিরাজদিখান উপজেলায় নিজের বাড়ির কাছে খুন হন তিনি। নিজের প্রকাশনা চালানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি-র মুন্সিগঞ্জ শাখার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শাহজাহান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ইফতার শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় এলাকার একটি দোকানে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেসময় তাঁর উপর হামলা চালায় পাঁচ দুষ্কৃতী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গতকাল বিকালে ওই দোকানের বাইরে প্রথমে একটি বোমা ফাটায় দুষ্কৃতীরা। তারপর দোকানের ভিতর থেকে শাহজাহান বাচ্চুকে বের করে আনে। এবং গুলি করে খুন করে। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, খুনিরা দুটি বাইকে করে এসেছিল। সংখ্যায় তারা মোট পাঁচজন ছিল। ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় থাকা সমস্ত চেক পোস্টকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি। 


কে ছিলেন শাহজাহান বাচ্চু? 

প্রথমত তাঁর পরিচয় ছিল তিনি একজন সাংবাদিক। একাধিক সংবাদপত্র ও ব্লগে লেখালেখি করতেন। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর নিজস্ব একটি প্রকাশনী সংস্থা ছিল। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির এক নেতা জানিয়েছেন, কলেজে পড়ার সময় ছাত্র রাজনীতি করতেন শাহজাহান বাচ্চু। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দলের মুন্সিগঞ্জ শাখার শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে বর্তমানে দলীয় কোনও পদে ছিলেন না তিনি। 

এই হামলা জঙ্গি হামলা কি না তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজ়ম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের একটি টিম ঘটনাস্থানে যায়। ওই টিমের এক সদস্য জানিয়েছেন, হামলার ধরন দেখে মনে হচ্ছে কোনও জঙ্গি সংগঠন এই হামলার সঙ্গে জড়িত। তবে নিশ্চিত হয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। 

২০১৩ সাল থেকে একাধিক ব্লগার খুন হয়েছেন বাংলাদেশে। খুন হন আহমেদ রাজীব হায়দার। ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলা অ্যাকাডেমির বইমেলা দেখে ফেরার সময় খুন হন অভিজিৎ রায়। তাঁর খুনের এক মাস পরেই খুন হন ওয়াশিকুর রহমান। ৩০ মার্চ ঢাকার তেজগাঁও এলাকার একটি রাস্তায় কুপিয়ে খুন করা হয়। এছাড়াও সেবছর ১২ মে সিলেটে খুন হন ব্লগার অনন্ত বিকাশ দাস এবং ৭ অগাস্ট খুন হন নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়। একাধিক ব্লগার খুন হওয়ার ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলাদেশের ব্লগারদের মধ্যে। তাঁদের মধ্যে অনেকে নিরাপত্তা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন।