সকাল থেকে দফায় দফায় বিক্ষোভ-আগুন-অবরোধে উত্তপ্ত ভাঙড়


শুরুটা হয়েছিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই। ভাঙড়ের জমি আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তীকে মুক্তির দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকেই দফায় দফায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদের তীব্রতা আরও বাড়ালেন তাঁর সমর্থকরা। বকডোবা থেকে হাড়োয়া রোড পর্যন্ত অবরোধ করেন তাঁরা। ভাঙড়ের বিভিন্ন রাস্তায় বাঁশ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি দফায় দফায় মিছিল করেন অলীক-সর্থকরা। তাঁদের দাবি, অলীক চক্রবর্তীকে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে। তাঁকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। শুধু তাই নয়, আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। পাশাপাশি, আজ বিকেলেও প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। নতুনহাট থেকে শুরু হবে এই মিছিল।

জমিরক্ষা কমিটির মুখপাত্র মির্জা হোসেন এ দিন বলেন, "অলীক চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে আমাদের আন্দোলন থামানো যাবে না।" পাশাপাশি তিনি এও হুঁশিয়ারি দেন, আরাবুল ইসলাম যদি মনে করেন জমি রকক্ষা কমিটির সদস্যদের দমিয়ে গ্রাম দখল করবেন, তা হলে তাঁকে প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে। 
বৃহস্পতিবার ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় ভাঙড় আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তীকে। কলিঙ্গ হাসপাতালের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে বারুইপুর জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল। প্রায় দু'বছর ধরে পুলিশের খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড ভাঙড় আন্দোলনের এই নেতা। প্রশাসনের দাবি, এই আন্দোলনের নিউক্লিয়াস সিপিআই-এমএল (রেড স্টার)-এর এই নেতা।
 
ইউএপিএ আইনে অভিযুক্ত অলীক। রয়েছে প্রায় ডজনখানেক মামলা। অলীককে গ্রেফতার করতে পারলেই ভাঙড় আন্দোলনের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া যাবে, একাধিকবার এই দাবি করেছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাই অলীককে গ্রেফতারের চেষ্টায় খামতি ছিল না। তা সত্ত্বেও কার্যত পুলিশের নাকের ডগায় বসে এই আন্দোলনকে সংগঠিত করে গিয়েছেন বছর পঞ্চাশের এই ব্যক্তি। লুকিয়ে থেকে নয়। ক'দিন আগেও রাস্তায় নেমে রাতভর বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয় অলীক চক্রবর্তীকে।

গ্রেফতারির খবর আসতেই ভাঙড়ে তাঁর সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ জমা হতে থাকে। তার পর প্রাথমিক ধাক্কা সামলে সন্ধ্যাতেই অলীকের সমর্থকরা মশাল মিছিল শুরু করেন। নেতার মুক্তির দাবিতেই এই মিছিলে নামে প্রচুর মানুষ।  নেওয়া হয়, একধিক প্রতিবাদ-কর্মসূচির পরিকল্পনা।

এ দিকে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অলীককে শুক্রবারই ভুবনেশ্বর আদালতে তোলা হবে। সেখানে ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে বারুইপুর জেলা পুলিশের। আদালত তা মঞ্জুর করলে তার পরই পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে আসা হবে অলীক চক্রবর্তীকে।