অসমে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃত আরও ৬


গুয়াহাটি: সোমবার নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয় অসমে৷ মঙ্গলবার তারই জেরে আরও ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে৷ ফলে সারা রাজ্যে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০৷

তুলনামূলকভাবে ত্রিপুরা ও মিজোরামে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। যদিও বন্যায় মনিপুরে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি বা এএসডিএমএর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে করিমগঞ্জ জেলায়৷ কাছারে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মাহুর, হারানগাজাও, মইবাং-এ প্রবল বৃষ্টিতে ধসের ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ। এএসডিএমএ-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অসমের হোজাই, পূর্ব কার্বি আংলং, পশ্চিম কার্বি আংলং, গোলাঘাট, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি ও কাছারে ৫.৬৪ লক্ষ মানুষ বন্যা দুর্গত।

সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি করিমগঞ্জে। প্রায় ১.৯৫ লক্ষ মানুষ বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত। এরপরেই রয়েছে হাইলাকান্দি। যেখানে প্রায় ১.৮৯ লক্ষ মানুষ বন্যা দুর্গত। রাজধানী গুয়াহাটির নীলাচল পাহাড়ে কামাখ্যা মন্দিরে ২২ জুন থেকে অম্বুবাচির মেলা শুরু হওয়ার কথা। প্রায় ৫ লাখ পুণ্যার্থী ভিড় করেন প্রতি বছর। শুক্রবার ধসের কবলে পড়েছে কামাখ্যা পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তাও। ধসের কারণে রেল ও সড়ক পথেও বিপত্তি দেখা দিয়েছে।

অসমের মোট ৭২৭টি গ্রাম জলের তলায়৷ ৩৮৯০ হেক্টর জমিতে চাষের কাজ হয়েছিল৷ সেগুলিও বন্যার কবলে৷ ফলে কয়েক লক্ষ টাকার ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন৷ খোলা হয়েছে ৪৫৭টি ত্রাণ শিবির৷ আশ্রয় নিয়েছেন ১,৫৭,৫২৪ জন মানুষ৷ ৯২৫০ জনকে সরানো হয়েছে নিরাপদ এলাকায়৷

মনিপুরের পশ্চিম ইম্ফল জেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ইম্ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু থউবার, পশ্চিম ইম্ফল এবং বিষ্ণুপুরে পরিস্থিতি অনেকটাই খারাপ। মণিপুরে প্রায় ১.৮ লক্ষ মানুষ বন্যা দুর্গত বলে জানা গিয়েছে। প্রায় ২২,৬২৪ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে ত্রিপুরা ও মিজোরামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

আবহাওয়া দফতর থেকে আরও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। শুধু অসম নয়, ধসের ফলে মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরারও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ত্রিপুরার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয় বলে জানা গিয়েছে। রাজধানী আগরতলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত ৩১ বছরে এত খারাপ অবস্থা হয়নি।

ত্রিপুরায় উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য গাজিয়াবাদ থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানদের। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন আসাম রাইফেলসও উদ্ধার কাজে নেমেছে।