বাঁশদ্রোণীর বধূর মৃত্যু, পণের চাপ?


স্বামী মৃগাঙ্ক রায়ের সঙ্গে পায়েল।

বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার বাঁশদ্রোণী থানা এলাকায়। মৃতার নাম পায়েল চক্রবর্তী।

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে পায়েল। কিন্তু, পায়েলের পরিবারের অভিযোগ, দাবি মতো পণ না মেলায় শ্বশুরবাড়িতে তাঁর উপর অত্যাচার চলত। সেই কারণেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। মৃতার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন পায়েলের বাবা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পায়েলের স্বামীকে আটক করেছে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, পায়েল শ্যামনগরের বাসিন্দা। একটি ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা মৃগাঙ্ক রায়ের। মৃগাঙ্ক নিউটাউনের একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মৃগাঙ্কর সঙ্গে বিয়ে হয় পায়েলের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য পায়েলের উপর অত্যাচার চালাত তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য তাঁর উপর চাপ দেওয়া হত। রাজি না হলেই চলত মারধর।

পায়েলের মা বলাকাদেবী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ন'টা নাগাদ মেয়ের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়। তাঁর কথায়, ''জামাইষষ্ঠীতে মেয়ে বাড়ি আসবে বলেছিল। জামাইয়ের জন্য পাঞ্জাবী কিনে রাখার কথা বলল। তার পরেই তাঁর মৃত্যু সংবাদ আসে।" বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বলাকাদেবী। পায়েলের বাবা স্বপনবাবু জানিয়েছেন, রাত ১০টা নাগাদ মৃগাঙ্ক ফোন করে জানায়, তাঁদের মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মৃতদেহ বিজয়গড় হাসপাতালে আছে।
পায়েলের মা বাবার দাবি, আত্মহত্যা নয়, খুন করা হয়েছে পায়েলকে। মৃগাঙ্ক ছাড়া, পায়েলের শ্বশুর-শাশুড়ি এবং মৃগাঙ্কের দাদা মৃদুল রায়ের বিরুদ্ধেও থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে পায়েলের পরিবার। বলাকাদেবীর অভিযোগ, পায়েলকে গলা টিপে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই কাজে মৃগাঙ্ককে সাহায্য করেছে তাঁর বাড়ির লোকজন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃগাঙ্ককে জি়জ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকেই মৃগাঙ্কের দাদা ও তাঁর বাড়ির অন্য লোকজনের কোনও খোঁজ মিলছে না। তবে, অভিযুক্তদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।