আর বাড়াবাড়ি বরদাস্ত করব না, যুব দলকে হুঁশিয়ারি মমতার


দলের অন্দরে গুঞ্জন চলছে বেশ কিছু দিনই। সেই আলোচনায় বারবার এসেছে যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা। দলে তাঁর 'প্রভাব বৃদ্ধি' এবং মূল সংগঠনের উপর 'আধিপত্য' বিস্তার সম্পর্কে কানাঘুষো কথাবার্তা ইদানীং কিছুটা প্রকাশ্যেও এসেছে। এমনকি পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যুব তৃণমূলের দাবি মানতে গিয়ে দলের মূল সংগঠনের অনেকে 'বঞ্চিত' হয়েছেন বলেও অভিযোগ। অনেকের মতে, যার কিছুটা প্রতিফলন ঘটেছে দলের বিরুদ্ধে নির্দলদের বাড়বাড়ন্তে। কিছু ক্ষেত্রে যা সংঘর্ষেও পৌঁছয়।

এ বার দলের সেই  স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরের দলীয় সভায় তিনি স্পষ্ট বলেন, ''যুব সংগঠন দলের থেকে বড় নয়। এটা ভুলে যাবেন না।'' চোখের চিকিৎসার কারণে অভিষেক এ দিনের সভায় ছিলেন না। কিন্তু যুব-র জেলা প্রতিনিধিরা ছিলেন। মমতা বলেন, ''যুব সভাপতি কারা আছেন, দেখি।'' পদাধিকারীরা দাঁড়াতেই সরাসরি প্রশ্ন করেন মমতা, ''তোমরা জেলা নেতৃত্বকে মানো, না মানো না? না কি ইচ্ছে মতো চলো?'' নেত্রীর দিকে তাকিয়ে তাঁরা মাথা নাড়লেও দলের দু-একজন প্রবীণ গলা তুলে বলেন, ''মানে না।'' মমতা বলেন, ''ওই তো বলছে, মানে না।'' তার পরেই মমতা বুঝিয়ে দেন, কোথাও সমান্তরাল শক্তি হিসাবে যুব তৃণমূলের উপস্থিতি তিনি বরদাস্ত করবেন না। তাঁর কথায়, ''পাশাপাশি দু'টো অফিস চলবে না। একই সময় আলাদা আলাদা কর্মসূচিও চলবে না। এ সব আমি মানব না।''

মমতা নিজের রাজনৈতিক লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে ছাত্রদের বোঝান, ‌''ছাত্র রাজনীতি থেকে অনেক ঘষটাতে ঘষটাতে এই জায়গায় পৌঁছেছি। টিউশনি করে কলেজ ইউনিট চালাতাম। সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে উঠতে হয়। হঠাৎ করে উঠে যাওয়া যায় না।''

দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, নদিয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় যুব নেতারা আলাদা ভাবেই চলা শুরু করেছিলেন। সেই সূত্রেই এ দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার যুব সভাপতি সওকত মোল্লার উদ্দেশে মমতা বলেন, ''তোমার সঙ্গে জয়ন্ত নস্করের (বিধায়ক) গোলমালটা কী? এ সব চলবে না। বন্ধ না হলে দু'জনকেই বের করে দেব।'' মমতা বলেন, ''দলের সঙ্গে যুব সংগঠনের ফারাক করা চলবে না। আমি যুব সংগঠন করে এসেছি।'' এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, মহিলা, ছাত্র, ট্রেড ইউনিয়ন—কেউই তৃণমূলকে বাদ দিয়ে নয়।''