রূপশ্রী প্রকল্পে ব্যাপক সাড়া, জেলায় খরচ তিন কোটি টাকা


মাত্র দু'মাসের মধ্যে জেলায় রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য ৩ কোটি ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ফলে উপকৃত হয়েছে বহু পরিবার। বর্ধমান পুরসভার পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, 'আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত যা আবেদন জমা পড়েছে, তার বেশির ভাগ টাকাই আমরা দিয়ে দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর অনেক জনমুখী প্রকল্পের মধ্যে এই প্রকল্পেও অনেক গরিব পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে।' 
গত ১ এপ্রিল রূপশ্রী প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মাত্র দু'মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন বহু পরিবার। এই প্রকল্পের মূল বিষয় হল, পরিবারের বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকার কম হলেই সাবালিকা মেয়ের বিয়ের জন্য সরকারি ভাবে অর্থ সাহায্য পাওয়া যাবে। আবেদন করার জন্য শুধু আয়ের প্রমাণ দিতে হবে। সঙ্গে লাগবে পাত্র ও পাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র, সচিত্র ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, স্কুলে পড়াশোনা করে থাকলে স্কুলের সংশাপত্র বা মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড। অবশ্যই লাগবে এর আগে কখনও বিয়ে না হওয়ার ঘোষণাপত্র। এটি স্বঘোষণা বা সেলফ ডিক্লারেশন দিলেও হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রথম পাতার স্বপ্রত্যয়িত ফটোকপি এবং প্রস্তাবিত বিয়ের আমন্ত্রণপত্র।

এই নিয়ম মেনেই এখনও পর্যন্ত জেলায় ৩ কোটিরও বেশি টাকা দিয়ে দরিদ্র পরিবারগুলিকে মেয়ের বিয়েতে সাহায্য করেছে রাজ্য সরকার। জেলা রূপশ্রী প্রকল্প দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্প ঘোষণার পর জেলায় মোট ২৫১৭ জন আবেদন করেছিলেন। তার মধ্যে ১২৫৪ জনের আবেদন গ্রাহ্য হয়েছে। আবেদনকারীদের মাথা পিছু ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কেন সুবিধা পেলেন না বাকিরা? জেলা রূপশ্রী প্রকল্পের দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে এমন অনেক পরিবারের তরফে আবেদন জানানো হয়েছিল, যাদের বার্ষিক আয়ের পরিমাণ বছরে দেড় লক্ষ টাকার চেয়ে বেশি। একমাত্র তাঁদের আবেদনই মঞ্জুর হয়নি। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে কেবলমাত্র বর্ধমান পুরসভা এলাকায় ৬০টি পরিবারকে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলার মাসিক রিভিউ বৈঠকেও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই রূপশ্রী প্রকল্প নিয়ে। 

জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, 'মঙ্গলবার জেলায় একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে রূপশ্রী, কন্যাশ্রী প্রকল্পগুলিকে নিয়ে আরও সচেতনতা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে রূপশ্রী প্রকল্প যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। তবে অনেকেই না বুঝে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদন করছেন। বিডিও, মহকুমাশাসক-সহ ব্লক স্তরের জনপ্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে আরও সচেতনতা বাড়়ানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'