রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থান দেবে বাংলাদেশ


ঢাকা: বাংলাদেশ-মায়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে নামেই। তার বাস্তবায়ন অনিশ্চিত। ফলে এখনও দেশে ফেরা অনিশ্চিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের। ফলে একপ্রকার অনিশ্চয়তার মধ্যে বাংলাদেশে দিন গুনতে হচ্ছে প্রায় ১০ লক্ষ শরণার্থীদের। এই পরিস্থিতিতে তাদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। এছাড়াও তাদের জন্য নয় বাসস্থান বানাতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার।

জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরেই প্রায় এক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে নতুন ঠিকানায় স্থনান্তরিত করা হবে। কক্সবাজারের শিবিরের উপর চাপ কমাতে উদ্বাস্তুদের নিয়ে যাওয়া হবে নোয়াখালি জেলার ভাসানচরে। বিপর্যয় মোকাবিলা ও ত্রাণ মন্ত্রকের সচিব শাহ কামাল জানান, বর্ষার মরশুম শেষ হলেই শুরু হবে এই প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, "বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গারা দেশে ফিরুক। শরণার্থীদের দ্রুত ফেরত নিক মায়ানমার। বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ধস, বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই রয়েছে। এই অবস্থায় ১০ লক্ষ মানুষকে আশ্রয় দেওয়াটা কঠিন।"

এদিন বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সচিব জানান, ভাসানচরে ১৬ হাজার একর জমি রয়েছে। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে এই জমির একটি অংশ ব্যবহার করা হবে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর জমির উপর উদ্বাস্তুদের থাকার ব্যবস্থা করেছে নৌসেনা। সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি। স্বেচ্ছায় সেখানে যারা যেতে চাইবে তাদের স্থানান্তরিত করা হবে। ভাসানচরে মোষ ও হাঁস পালনের সঙ্গে মাছ চাষ ও কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শরণার্থীদের স্বনির্ভর করতেই এই উদ্যোগ।

প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রতিবছরই ভাসানচরে বন্যা হয়। তবে শিবির তৈরির সময় সেই কথা মাথায় রাখা হয়েছে। দ্বীপের নিম্নাঞ্চল ভরাট করে চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করছে নৌবাহিনী। দ্বীপটির উন্নয়নে ২৮ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে সরকার। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ১২০টি আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। শরণার্থীদের পুনর্বাসনে বিশ্বব্যাংকের কাছে ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের অনুদানের জন্য আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে উদ্বাস্তুদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মায়ানমারের উপর কুটনৈতিক চাপ বাড়ানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।