গুয়াতেমালায় ফের অগ্নুৎপাত! মৃত কমপক্ষে ৭৫ জন, ১৯২ জন নিখোঁজ


ফের ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত ঘটালো গুয়াতেমালার ফুয়েগো আগ্নেয়গিরি। এর ফলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৫। এখনও নিখোঁজ আরও অন্তত ১৯২ জন। রবিবার ফুয়েগোতে বড় রকমের অগ্নুৎপাত হয়েছিল। এর পর আপাতত আর নতুন করে আঘাতের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তাঁদের সেই ধারণা কে ভুল প্রমাণ করে মঙ্গলবার নতুন করে অগ্নুৎপাত হয় ফুয়েগো আগ্নেয়গিরিতে। এইবারে লাভা-উদগীরণ পরিমাণ আরও বেশি ছিল।

গত রবিবার (৩ জুন) ভোরে আচমকাই আগ্নেয়গিরিটিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। এতটাই জোরে বিস্ফোরণ ঘটে যে মাটি থেকে প্রায় ১০ কিলেমিটার বা ৩৩ হাজার ফুট উপরে ছাই, উত্তপ্ত কাদামাটি ও বিষাক্ত গ্যাস নিক্ষিপ্ত হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্থ হয় এস্কুনতলা, সাকাতেপেকুয়েজ ও চিমাল্তেনাঙ্গো ডিভিশনের ১৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ। প্রায় ৩ হাজার ২৭১ জনকে নিরাপদ এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। ১ হাজার ৭৮৭ জনের জায়গা হয় সরকারি আশ্রয় শিবিরে।

এরপর সেদেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সিসমোলজির প্রধান এডি স্যানচেজ জানিয়েছিলেন সোমবার সন্ধ্যা থেকে অগ্ন্যুৎপাতের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে। তা থেকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল পরবর্তী কয়েকদিনে তা আরও কমে যাবে। মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ চলাকালীনই ফের অগ্ন্যুৎপাত হয় ফুয়েগোয়। বাড়তে থাকে লাভার উদগীরণ। আগ্নেয়গিরিটির দক্ষিণাংশের ঢাল বেয়ে দ্রুত বেগে নামতে থাকে গলন্ত লাভার স্রোত বা পাইরেক্লাস্টিক ফ্লো। ওই ঢালে থাকা এল রোডিও সান মিগুয়েল লস লোতেস গ্রামগুলি লাভা ও আগ্নেয়গিরির ছাইতে চাপা পড়েছে। বাসিন্দাদের অগ্ন্যুৎপাতের মতো জরুরী পরিস্থিতির মোকাবিলা করার ট্রেনিং থাকলেও এত দ্রুত পাইরোক্লাস্টিক স্রোত নেমে আসে, যে নিরাপদ এলাকায় যাওয়ার সময় সুযোগটুকুও পাননি ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

মধ্য আমেরিকার এই দেশটিতে ৩৪টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে।ফুয়েগো তারমধ্যে অন্যতম। স্প্যানিশে 'ফুয়েগো' শব্দের অর্থ 'আগুন'। মাঝে মাঝেই ফুয়েগো থেকে অগ্ন্যুৎপাত হয়। রবিবার থেকে ফুয়েগো আগ্নেয়গিরিতে এই বছরেই দ্বিতীয়বারের মতো অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। তবে গত কয়েকবছরে ফুয়েগোর এত ভয়াল রূপ দেখা যায়নি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন গত চার দশকের মধ্যে গুয়াতেমালায় এটি সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত। সেদেশের ডিসাস্টার রিলিফ এজেন্সির হিসেব অনুযায়ী বহু মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি এখনও নিখোঁজ ১৯২ জন মানুষ।