ভারতীয় অর্থনীতির অবস্থা তিনটি টায়ার পাংচার হওয়া গাড়ির মতোঃ চিদাম্বরম


ঠানে: পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর কটাক্ষ, 'অর্থনীতির উন্নতির চারটি ইঞ্জিন হল যথাক্রমে বেসরকারি বিনিয়োগ, ব্যক্তিগত ব্যয়, রফতানি ও সরকারি খরচ। এটি একটি গাড়ির চারটি টায়ারের মতো। একটি বা দু'টি টায়ার পাংচার হয়ে গেলে গাড়ির গতি শ্লথ হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে তিনটি টায়ারই পাংচার হয়ে গিয়েছে।'

মহারাষ্ট্র কংগ্রেস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন চিদম্বরম। তিনি আরও বলেছেন, 'সরকার শুধু স্বাস্থ্যক্ষেত্র এবং কিছু প্রকল্পে টাকা খরচ করছে। এই খরচ চালিয়ে যাওয়ার জন্য পেট্রোল, ডিজেল, এমনকী এলপিজি-র উপরেও কর চাপাচ্ছে সরকার। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেই টাকার কিছুটা অংশ সরকারি প্রকল্পে কাজে লাগানো হচ্ছে।'

জিএসটি-র পাঁচটি ধাপ নিয়েও মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছেন চিদম্বরম। তিনি বলেছেন, 'নোট বাতিলের পর এই সরকার জিএসটি চালু করেছে। তার পাঁচটি ধাপ আছে এবং এর সঙ্গে সেস যুক্ত করা হয়েছে। জিএসটি একটিমাত্র করব্যবস্থা। তবে ভারতে দুই ধরনের করের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু ভারতে পাঁচ ধরনের কর থাকবে, এটা আমরা কল্পনা করতে পারিনি। বর্তমান সরকারের আমলে ভারতের আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। ইউপিএ আমলে রফতানি থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমান সরকারের আমলে গত বছর ৩০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি হয়েছে। এর আগের বছরগুলিতে ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম রফতানি হয়েছিল। এতেই বোঝা যাচ্ছে, বিদেশে পণ্য রফতানি বাবদ আয় কমেছে।'

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা নিয়েও নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেছেন, 'প্রত্যেক ব্যক্তিকে গড়ে ৪৩,০০০ টাকা করে মুদ্রা ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এই টাকায় পকোড়ার দোকান খোলা যেতে পারে। কিন্তু কোনও বড় বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়।'

চিদম্বরম আরও বলেছেন, 'বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়ের মানুষকে বার্তা দিচ্ছে, তাঁরা এদেশের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। খাদ্যাভ্যাস, সামাজিক আচরণ, অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড নিয়ে দেশে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সামাজিক ক্ষেত্রে যে গোলমাল করেছে মোদী সরকার, তার তুলনায় আর্থিক ক্ষেত্রে ত্রুটি অনেক কম এবং সেটি সংশোধন করা সম্ভব।'