ছেলেধরা সন্দেহে মালদহে গণপিটুনিতে মৃত্যু


ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় মাঝবয়সি এক ব্যক্তিকে এ বার গণপিটুনি দিয়ে খুনই করে ফেলা হল মালদহের হবিবপুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ দিনে এই নিয়ে হবিবপুরের আইহো ও বুলবুলচণ্ডীতে একই সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হলেন মোট পাঁচ জন। বাকি চার জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁদের দু'জন মহিলা। কিন্তু বুধবার বুলবুলচণ্ডীতে জখম ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি। মোবাইলে করা ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, একটি খুঁটিতে বেঁধে ওই ব্যক্তির মাথায় লাঠি দিয়ে বারবার আঘাত করা হয়েছে। প্রতিবার তিনি যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে উঠছেন, আবার আঘাত এসে পড়ছে।

আগের চারটি ঘটনাতে এক জনকেও পুলিশ আটক করেনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, গুজব রুখতে উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা প্রশাসন নেয়নি। তাই প্রাণহানিও রোখা গেল না। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ অবশ্য বলেন, ''তিন জনকে আটক করা হয়েছে।'' বাসিন্দাদের সতর্ক করা হবে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কুসংস্কারের দাপট এই গ্রামগুলোতে যথেষ্ট। ডাইনি অপবাদে খুনের অভিযোগও আগে উঠেছে। সাক্ষরতার হার ষাট শতাংশ মতো। তবে কাছাকাছি দু'টি স্কুল রয়েছে। আবার, বেআইনি মদের ঠেকও রয়েছে বলে দাবি। এখান থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত খুবই কাছে। গরু পাচার ও কালো টাকার কারবারের অভিযোগ বারবার ওঠে। পুলিশের কয়েক জন অফিসারের বক্তব্য, প্রশাসনের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই গণপ্রহারের ঘটনা বাড়ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে আরও উদ্বেগের কথা, এ দিন ওই ব্যক্তিকে মারতে দেখা গিয়েছে অনেক কিশোরকেও। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, কয়েক জনই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, গোটা এলাকার মানুষকে দোষ দেওয়া উচিত হবে না।