দীর্ঘ ২২ বছরের টানাপোড়েনের পর ঘরে ফিরল মেয়ে, আনন্দে বাঁধ ভেঙছে চোখের জল


বীরভূম:  কথায় আছে যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণই আশ। দীর্ঘ প্রতীক্ষায় সেই আশাটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন বিলানুর বিবি। ভাবেননি, ফিরে পাবেন হারানো মেয়েকে। অথচ ২২ বছর পর ঘরে ফিরেছে সে। আনন্দে বাঁধ ভাঙছে চোখের জল।

গল্প মনে হলেও সত্যি। অন্তত তেমনটাই দাবি টগরী বিবির। ২২ বছর আগে পরিবারের সঙ্গে বীরভূমের মহম্মদবাজারে থাকতেন তিনি। রানিগঞ্জের বাসিন্দা শাহবুবের সঙ্গে টগরীর বিয়ে দেন তাঁর মা বিলানুর।

তারপরের ঘটনা বড় এলোমেলো। বিয়ের কিছুদিন পরই নিখোঁজ হয়ে যান টগরী। বেপাত্তা হয়ে যান তাঁর স্বামীও। ২২ বছর পর ঘরে ফিরে টগরী জানালেন..মা বিয়ে দিয়েছিল। স্বামী ট্রেনে তুলে ছেড়ে চলে যায়। আমি অচেনা জায়গায় চলে যাই।

ট্রেনে উত্তরপ্রদেশের এক অখ্যাত গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিলেন টগরী। সেখানে তাঁকে আশ্রয় দেন নরিন্দর নামে এক যুবক। কিছুদিন পর নরিন্দরের সঙ্গে ফের ঘর বাঁধেন তিনি। দু'জনের একটি সন্তানও হয়। স্বামী, সন্তান নিয়ে মায়ের ঘরে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন টগরী। কিন্তু বিধি বাম। গাইসালের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় স্বামী, সন্তানকে হারান টগরী। তারপর শ্বশুরবাড়ি ফিরে গেলেও ঠাঁই হয়নি। উল্টে স্বামীকে খুনের দায়ে হাজতবাস করতে হয়।

জেল থেকে বেরোনোর পর এদিক-ওদিক ঘুরে পৌঁছন সাওলি গ্রামে। এলাকারই একজনের বাড়িতে আশ্রয় মেলে। জমিতে কাজ করে চলে দিন গুজরান। হঠাৎই মনে পড়ে বাড়ির কথা, মা, দাদা, বোনের কথা। হাজার পাঁচেক টাকা জোগাড় করে বাইশ বছর পর ঘরে ফেরেন টগরী।

বলিউডি থ্রিলারকেও বোধ করি হার মানায় এই ঘটনা। তবে টগরী অত শত বোঝেন না। আপনজনেদের কাছে ফিরতে পেরে খুশি তিনি। তাঁদের ছেড়ে আর হারিয়ে যেতে রাজি নন কোনও মতেই।