রাস্তায় কোটি টাকা কুড়োতে ব্যস্ত এলাকাবাসী


বারুইপুর: রাস্তার উপরে রাশি রাশি নোট। আবর্জনায় আঁতিপাঁতি খুঁজে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। সাইকেল, মোটরবাইক থেকে নেমে হুমড়ি খেয়ে রাস্তায় বসে পড়ে হাতড়াচ্ছেন অনেকে।

কেন? হয়তো পেয়ে যেতে পারেন এক বান্ডিল নোট। বৃহস্পতিবার ওই নোট জোগাড় করা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল ভাঙড়ে।
 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হালকা বৃষ্টি মাথায় বৃহস্পতিবার সকালে একটি লাল রঙের মারুতি ভ্যান নিউটাউন থেকে বাগজোলা খাল ধারের নির্জন রাস্তা ধরে ভাঙড়ের দিকে যাচ্ছিল। এমন সময় হঠাৎ গাড়িটি রাস্তা ছেড়ে ডানপাশে বাগজোলা খালের ওপর অবস্থিত কৃষ্ণমাটি ব্রিজে উঠে গাড়ির দরজা খুলে তড়িঘড়ি কয়েকশো কাগজের প্যাকেট ব্রিজের ওপর নামিয়ে সেগুলি একে একে খালের জলে ফেলতে শুরু করে।

সেই সময় খালের জল থেকে দুই যুবক বর্জ্য সংগ্রহ করছিল। এই দৃশ্য দেখে তারা চিৎকার করে উঠলে যুবকরা তাড়িঘরি গাড়ি স্টার্ট করে নিউটাউনের দিকে পালিয়ে যায়। মুহুর্তের মধ্যেই ওই এলাকার মানুষ জানতে পারে ব্রিজের ওপর বস্তা বস্তা টাকা পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অসংখ্য লোক জমায়েত হয়ে তা কুড়োতে শুরু করেন। রীতিমতো কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। কৃষ্ণমাটি ব্রিজ তখন ছোটখাটো যুদ্ধ ক্ষেত্রের চেহারা নেয়।

এরপর খবর পেয়ে কাশীপুর থানার পুলিশের টহলদারি ভ্যান ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের আসার আগেই লোপাট হয়ে যায় কয়েক কোটি টাকা। টাকা হাতে নিয়ে পুলিশ বুঝতে পারে এই টাকা আসল বা জাল নয় এটা জেরক্স করা। পুলিশ ঘটনাটি বলার পরই আর হাতের সামনে কোটি টাকা ছড়িয়ে দেখলেও কেউ তুলতে নারাজ। এই টাকা উদ্ধার করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।

এত বিপুল পরিমাণ টাকা কোথা থেকে এল কে বা কারা ফেলে গেল সেই বিষয়ে অন্ধকারে পুলিশ কর্তারা। এই বিষয়ে পুলিশের দাবি, ওই নোটগুলি আসল বা জাল নয়৷ ওই টাকাগুলি জেরক্স নোট৷ ওই নোটের উপরে জল পড়লে রং উঠে যাচ্ছে। যদিও কারা ওখানে ওই নোটগুলি ফেলে দিয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।

এই বিষয়ে ভাঙড়ের তৃণমূল ব্লক সভাপতি ওহিদুল ইসলাম বলেন, ''ওই জাল নোটগুলি বাংলাদেশ যাচ্ছিল না অন্য কোথাও যাচ্ছিল তার তদন্ত করছে পুলিশ। প্রশাসন ও দলের পক্ষ থেকে গ্রামে মাইকিং করা হয়েছে যারা জাল নোট পেয়েছে তারা যেন সেগুলি থানায় জমা দেন বা নিজেরা নষ্ট করে দেন।''

এই বিষয়ে স্থানীয় এক যুবক জানিয়েছেন, ভাঙড়ের এই নিউটাউন বাগজোলা খাল পাড়ের রাস্তা অত্যন্ত নির্জন এলাকা। বিগত কয়েক বছরে এই রাস্তার পাশ থেকে তিনটি দেহ উদ্ধার হয়েছে৷ আর এবার বস্তা ভরতি টাকা। মূলত পুলিশি টহলদারি অভাবে এই রাস্তা দুষ্কৃতীদের কাছে অবাদ বিচরণ এর যায়গা হয়েছে উঠেছে। এই রাস্তায় পুলিশি টহলদারি বাড়ানো এবং রাস্তায় আলো লাগানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।