তৃণ-দ্বন্দ্বে ছাত্রকে নগ্ন করে হেনস্থা


কলেজে ছাত্র সংসদে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু গোলমালের জেরে ছাত্র সংসদের এক পদাধিকারীকে নগ্ন করে হেনস্থা এবং তার ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছাত্র সংগঠনের ইউনিট সভাপতি, এক অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি খাস কলকাতার সেন্ট পলস কলেজে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগকারী ওই কলেজের ছাত্র এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত সংসদের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী। অভিযোগ উঠেছে ওই কলেজের টিএমসিপির ইউনিট সভাপতি, এক অশিক্ষক কর্মচারী এবং বহিরাগত টিএমসিপি সদস্য শেখ এনামুল হক ওরফে তপুর বিরুদ্ধে। অভিযোগ জমা পড়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে।

ঘটনাটি সামনে আসায় স্তম্ভিত শিক্ষাজগত।

অভিযোগকারী ছাত্রের বক্তব্য, কলেজের 'স্টুডেন্টস এড ফান্ড'-এর হিসেব চাওয়া নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। সেই গোলমাল থেকেই কলেজের ভিতরে অভিযোগকারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিয়ো তোলা হয় এবং তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রমাণ হিসেবে ওই ছাত্র ভিডিয়োটি সামনে এনেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, তিন জন মিলে জোর করে তাঁর জামাপ্যান্ট খুলে দিচ্ছে। তার পর নগ্ন অবস্থার ছবি তুলছে। সম্মান বাঁচাতে ছাত্রটি ঘরের মধ্যে ছুটে ছুটে পালাচ্ছেন এবং তাঁর পিছু ধাওয়া করে অভিযুক্তেরা ছবি তুলেই যাচ্ছেন। এক সময়ে অসহায়ের মতে মাটিকে কুঁক়ড়ে গিয়ে কাঁদতে শুরু করেন নিগৃহীত ছাত্রটি। গোটা সময়ে অভিযুক্তেরা লাগাতার হেসেছেন এবং কটূক্তি করেছেন।

সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন দাখিলের সময় আলিপুরের ট্রেজারি বিল্ডিং থেকে এক চিত্রসাংবাদিককে তুলে নিয়ে গিয়ে কার্যত নগ্ন করে তল্লাশির অভিযোগ উঠেছিল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এ বার তার থেকেও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল শিক্ষাপ্রাঙ্গণের ভিতর এবং তাতে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী, দু'পক্ষই শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা। ঘটনার সময়ে টিএমসিপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কায়ুম মোল্লাও উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ দিন কায়ুম বলেন, ''আমি নিজেই অসুস্থ। ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানি না।'' এনামুল বলেন, ''ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত। তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে।'' তবে টিএমসিপি-র সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ''আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।''