বেতন কমিশনকে প্রস্তুতির নির্দেশ দিল নবান্ন


বেতন কমিশনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিল নবান্ন। সূত্রের দাবি, রাজ্য সরকারের তরফে বেতন কমিশনকে জানানো হয়েছে, নির্দেশ দিলেই যেন সুপারিশ জমা দেওয়া হয়। কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে আগামী ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি কর্মচারীদের বকেয়া মেটানোর বিষয়ে একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। অর্থ দফতর সূত্রের খবর, তার পর থেকেই দুই কিস্তিতে ২৫ শতাংশ মহার্ঘভাতা দেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে।

প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যায়, রীতি অনুযায়ী মহার্ঘভাতা ১২৫ শতাংশ হলেই বেতন কমিশন কার্যকর করা হয়। বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতার পরিমাণ ১০০ শতাংশ। বকেয়া ২৫ শতাংশ দেওয়ার জল্পনা সত্যি হলে বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে বাধা থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

বাস্তবে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বেতন কমিশনের বর্ধিত বেতন চালু হওয়ার কথা ছিল। তা তখন হয়নি। কর্মচারী সংগঠনগুলির দাবি, শুধু মূল বেতনের উপর হিসাব হলে (অন্তর্বর্তী বেতনবৃদ্ধি বাদ দিয়ে) এই তিন বছরে একজন গ্রুপ-ডি কর্মচারীর বকেয়ার পরিমাণ ৯১ হাজার টাকার কিছু বেশি। একজন লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ১ লক্ষ ২১ হাজার টাকার বেশি। আনুমানিক ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে একজন আপার ডিভিশন ক্লার্কের। অন্তবর্তী বেতনবৃদ্ধি বিচার করলে এই বকেয়ার পরিমাণ আরও বাড়বে।

কিন্তু রাজ্যের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া বাবদ বিপুল আর্থিক বোঝা কী ভাবে বহন করা সম্ভব তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। যদিও কর্মচারী সংগঠনগুলির দাবি, গত পাঁচ বছরে বেতন এবং পেনশন বাবদ সরকার যত টাকা সাশ্রয় কয়েছে, তা দিয়েই বকেয়ার অনেকটা অংশ মিটিয়ে দেওয়া সম্ভব। তাদের হিসেব বলছে, ২০১২-'১৩ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৬-'১৭ আর্থিক বছর পর্যন্ত বেতন এবং পেনশন বাবদ ১২ হাজার ৩০০ কোটি বেশি অর্থ বেঁচে গিয়েছে সরকারি কোষাগারে।

৫ এবং ৭ জুন কলকাতা হাইকোর্টে মহার্ঘ ভাতা মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন কর্মচারীরা। নবান্নের খবর পুজোর আগে বেতন কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়বে নবান্নে।