নিজের সংস্থার ডেপুটিদের থেকে কম বেতন মুকেশ আম্বানির


রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর তিনি। কিন্তু, প্রায় এক দশক তাঁর বেতন বাড়েনি। এমনকী, নিজের সংস্থার ২ ডেপুটির থেকে কম বেতন পান মুকেশ আম্বানি।

ফোর্বস ম্যাগাজ়িনের রিপোর্ট অনুসারে, ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের চেয়ারম্যান হিসেবে বাৎসরিক ১৫ কোটি টাকা পান। ২০০৯ সালের অক্টোবরে তাঁর এই বেতন স্থির হয়। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত ওই বেতনই নিচ্ছেন। এর জেরে প্রতি বছর প্রায় ২৪ কোটি টাকা কম পান রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের কর্ণধার। সংস্থার ম্যানেজার পর্যায়ে খরচে লাগাম নিয়ে ব্যক্তিগত দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য নিজের বেতন না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের বার্ষিক রিপোর্ট বেরিয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে বেতন এবং ভাতা হিসেবে মুকেশ আম্বানি পেয়েছেন ৪.৪৯ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে যা ছিল ৪.১৬ কোটি টাকা। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের কর্ণধার বার্ষিক কমিশন হিসেবে আগের বছরের মতো ৯.৫৩ কোটি টাকাই পেয়েছেন। তবে উপরি পাওনা আগের অর্থবর্ষ থেকে কমেছে। ৬০ লাখের জায়গায় ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তিনি পেয়েছেন ২৭ লাখ টাকা। রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট আগের মতো ৭১ লাখ টাকাই রয়েছে।

তবে মুকেশ আম্বানির বেতন না বাড়লেও সংস্থার অন্য ডিরেক্টরদের বেতন বেড়েছে। মুকেশ আম্বানির আত্মীয় নিখিল মেসওয়ানি এবং হিতাল মেসওয়ানি সংস্থার এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তাঁরা পেয়েছেন ১৯.৯৯ কোটি টাকা করে। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে ১৬.৫৮ কোটি টাকা করে দু'জনে পেয়েছিলেন। ২০১৫-১৬ সালে তা ছিল ১৪.৪ কোটি টাকা। আর তার আগের অর্থবর্ষে দু'জনে ১২.০৩ কোটি টাকা করে পেয়েছিলেন।

সংস্থার আরও এক এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর পি এম এস প্রসাদের বেতন বেড়ে হয়েছে ৮.৯৯ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষের চেয়ে প্রায় ৩৩ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবর্ষে তিনি পেয়েছিলেন ৬.০৩ কোটি টাকা।

একইরকমভাবে সংস্থার রিফাইনারি চিফ পবন কুমার কপিলের বেতন বেড়ে হয়েছে ৩.৪৭ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে তাঁর বেতন কিছুটা কমে হয়েছিল ২.৫৪ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে তিনি পেয়েছিলেন ২.৯৪ কোটি টাকা। আর ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে ছিল ২.৪১ কোটি টাকা।

রিলায়েন্সের নন এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টররা প্রত্যেকে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ১.৫ কোটি টাকা কমিশন পেয়েছেন। গত অর্থবর্ষের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নীতা আম্বানিও একজন নন এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর। 

বেতন না বাড়লে বিশ্বে ধনীদের তালিকায় আরও উপরে উঠে এসেছেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের কর্ণধার। ফোর্বস ম্যাগাজ়িনের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মুকেশ আম্বানির এখন সম্পত্তির পরিমাণ ৪০.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বের সবচেয়ে ধনীদের তালিকায় ১৯ নম্বরে রয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে এই তালিকায় ৩৩ নম্বরে ছিলেন।