জেদি মেয়ের কাহিনী, গোঁসাইয়েরহাটের নন্দিতা


বাবা হত দরিদ্র চাষি। নিজেদের এক ছটাক জমিও নেই। অন্য়ের জমিতে চাষ করে যে আয় হয়, তাতে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোটাই দস্তুর। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের প্রত্য়ন্ত এলাকায় বাড়ি নন্দিতা বর্মনের। অভাবতো রয়েইছে, সঙ্গে পারিপার্শ্বিক আরও নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে প্রতিদিনের লড়াই। এত সবে জেদটা যে কতখানি বেড়ে গিয়েছে, উচ্চ মাধ্য়মিকের মেধা তালিকায় প্রথম দশে জায়গা করে নিয়ে সেটাই প্রমাণ করলেন কোচবিহারের গোঁসাইয়েরহাটের মেয়ে।

কলাবিভাগে ৪৮১ নম্বর পেয়ে এ বারের উচ্চমাধ্য়মিকে দশম স্থান পেয়েছেন গোঁসাইয়েরহাট হাইস্কুলের ছাত্রী নন্দিতা। সে খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকেই গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছে তাঁদের বাড়ি।  জানা গেল, খুব জ্বর থাকায় উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দুটো পরীক্ষা মনের মতো হয়নি নন্দিতার। তাই এ বারের মতো আর পরীক্ষা না দেওয়ার কথা ভেবে ফেলেছিলেন। কিন্তু স্কুলেরই শিক্ষক  রবীন্দ্রনাথ বসু  বাড়ি গিয়ে তাঁকে বোঝান। তারপর আবার পরীক্ষায় বসতে রাজি হন নন্দিতা।

আগামীতে কলেজে অধ্য়াপনা করতে চান বলে জানালেন নন্দিতা।  সেই লক্ষ্য়ে শত অভাবের মধ্যে নিজেকে তৈরি করছেন| স্কুলের দুই শিক্ষক কোনও পারিশ্রমিক না নিয়েই  তাঁকে পড়িয়েছেন বলে জানালেন তাঁর বাবা। এখন মেয়ের উচ্চশিক্ষার উপায় কী ভাবে হবে সেটা ভেবে এই আনন্দেও চিন্তার মেঘ গোটা পরিবারে।