হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো আইনি নোটিস বৈধ, যুগান্তকারী পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাই কোর্টের


এরাজ্যের ভোটের সময় এক যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জমা দেওয়া সমস্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘোষিত হয়েছিল বৈধ হিসেবে। রাজনৈতিক মহল মনে করছিল হাই কোর্টের এই রায় নির্বাচনী ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সংস্কার। খানিকটা একই পথে হেঁটে যুগান্তকারী পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাই কোর্টেরও। স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার করা একটি মামলার ভিত্তিতে দিল্লি হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো আইনি নোটিস আদালতে বৈধ নথি হিসেবে গণ্য করা হবে।

দিল্লি হাইকোর্টে রোহিত যাদব নামের এক গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল এসবিআই। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, বারবার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নোটিস পাঠানো হলেও তাঁর জবাব দিচ্ছেন না ঋণখেলাপিতে অভিযুক্ত রোহিত। অথচ, হোয়াটসঅ্যাপে দেখানো 'ব্লু-টিক' ইঙ্গিত দিচ্ছে এসবিআইয়ের পাঠানো মেসেজগুলি 'সিন' করেছেন যাদব। দীর্ঘদিন ধরে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ না করায় ৮ জুন হোয়াটসঅ্যাপে পিডিএফ ফরম্যাটে রোহিতকে আইনি নোটিস পাঠায় স্টেট ব্যাংক। নোটিসটি খুলেও দেখেন রোহিত, পিডিএফ ফাইলটিতেও তিনি ক্লিক করেছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপে দেখানো 'ব্লু-টিকে'র মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়। অথচ এরপরও কোনও উত্তর দেননি রোহিত যাদব।

এসবিআই আইনজীবীর এই দাবি মেনে নেন বিচারপতি গৌতম প্যাটেল। তিনি বলেন যেহেতু, হোয়াটসঅ্যাপে 'ব্লু-টিক' দেখাচ্ছে তাই ধরে নিতে হবে অভিযুক্ত রোহিত মেসেজটি খুলে দেখেছেন। সুতরাং, হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো এসবিআইয়ের এই আইনি নোটিসটিকে বৈধ হিসেবে ধরে নেওয়া যেতেই পারে। এরপরই অভিযুক্ত রোহিতের বিরুদ্ধে পরবর্তী স্তরে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন বিচারপতি।

আইন অনুযায়ী কাউকে আইনি নোটিস পাঠাতে গেলে তা পাঠাতে হয় স্বশরীরে অথবা রেজিস্টার্ড পোস্টের মাধ্যমে। সম্প্রতি ই-মেল বা টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে পাঠানো নোটিসগুলিকেও বৈধ বলে ধরে নেওয়া শুরু হয়েছিল। তবে, হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো নোটিসকে বৈধ নথি হিসেবে বিবেচনা করা হল এই প্রথম। বিচারপতির এই সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী হিসেবেই বিবেচনা করছে ওয়াকিবহাল মহল।