বাবা কাগজ কুড়োন, AIIMS-এ ডাক্তারি পড়তে যাচ্ছেন ছেলে


ভোপাল: অভাব অনটনের সংসার, প্রতিদিনের জীবনযুদ্ধের বাধা বিপত্তিকে পিছনে ফেলে সোনার ছেলের উড়ান এখন AIIMS-এ ৷ দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করে ফের অসাধারণ সাফল্যের নজির গড়ল আমাদের দেশের আরও এক কৃতী ছাত্র ৷ ইচ্ছাশক্তি, অধ্যাবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের জোরে যেকোন লক্ষ্য পূরণ যে সম্ভব তা আরও একবার প্রমাণ করলেন মধ্যপ্রদেশ দেওয়াসের বাসিন্দা আসারাম চৌধুরি ৷ যোধপুরের অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্স বা এইমসে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে আসারাম ৷

বাবা রাস্তায় পড়ে থাকা কাগজ, খোলামকুচি, ভাঙা সরঞ্জাম কুড়িয়ে বিক্রি করে সংসার চালান ৷ যৎসামান্য আয়ে একবেলাই পেট ভরে ভাল করে খাবারও জোটে না ৷ প্রতিদিন এমন পরিস্থিতির সঙ্গেই লড়াই করে একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করেছেন ভবিষ্যতের স্বপ্ন পূরণের জন্য ৷ পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া সময় গ্রামের এক চিকিৎসককে দেখে ডাক্তার হওয়ার বাসনা জাগে এই কৃতী ছাত্রের মনে ৷ আধপেটা খেয়ে, ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে ডাক্তার হওয়ার লক্ষ্যে দিনরাত এক করে প্রস্তুতি নিয়েছে বছর কুড়ির আসারাম ৷ ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হয়ে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা করার ৷ সেই স্বপ্নেরই প্রথমধাপ হিসেবে AIIMS-এর এন্ট্রাস টেস্টে সফল সে ৷

তার এই কৃতিত্বের পিছনে বহু মানুষের অবদান রয়েছে বলে মনে করেন আসারাম ৷ সবার আগে তার বাবা-মাকেই ধন্যবাদ দিয়েছে আসারাম ৷ প্রবল আর্থিক অনটনের মধ্যেও ছেলেকে মনের জোর জোগাতে কোনও কার্পণ্য রাখেননি তাঁরা ৷ ছেলের কৃতিত্বে আনন্দে আত্মহারা আসারামের বাবা-মা, রঞ্জিত এবং মমতা চৌধুরী ৷

এছাড়া আসারাম জানিয়েছেন, ছোট থেকে পাশে থেকেছে তাঁর স্কুল ৷ সবরকম ভাবে সাহায্য করেছেন তাঁর আইডল, গ্রামের সেই চিকিৎসক, যাকে দেখে প্রথম ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল আসারাম ৷ অবদান কম নেই পুনের দক্ষিণা ফাউন্ডেশনেরও ৷ পিছিয়ে এলাকা থেকে আসা এবং দরিদ্র ঘরের কৃতী ছাত্রদের প্রশিক্ষণ দেয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৷ এখান থেকেই ডাক্তারির এন্ট্রাসের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল সে ৷

তবে স্বপ্নের প্রথম ধাপে সাফল্য পেলেও এখনই আবেগে বয়ে যেতে চান না আসারাম ৷ সামনে অনেক কঠিন পথ ৷