অভিযোগকারিণীর বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করলেন খোদ বিচারক, কিন্তু কেন?


কাটোয়া : শাশুড়ির বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গৃহবধূ। এমন প্রমাণ হাতে আসার পর এবার অভিযোগকরিণী গৃহবধূর বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করল আদালত। বুধবার এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিল কাটোয়ার অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারক সন্দীপ চৌধুরি কাটোয়ার অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গৃহবধূ মৌসুমী দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ১৪ আগষ্টের মধ্যে অভিযুক্তকে আদালতে হাজিরার জন্য সমনও পাঠানো হচ্ছে। মৌসুমী দাসের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় জামিন অযোগ্য মামলা দায়ের হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে লাগাতার যৌন হেনস্তা করেছেন ঠাকুমা। কাটোয়া থানায় গত এপ্রিলে শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন গৃহবধূ মৌসুমীদেবী। অভিযোগ, শাশুড়ি মীরাদেবীই নাকি তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে মেয়েকে দিনের পর দিন যৌননিগ্রহ করেছেন। পুলিশ মীরাদেবীর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করেছিল। সেই সময় শিশুটির গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়। এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে অভিযোগ মিথ্যা। শাশুড়ির সঙ্গে বনিবনা  হচ্ছিল না। তাই মীরাদেবীর বিরুদ্ধে এই মিথ্যে অভিযোগ আনেন ওই গৃহবধূ। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা আদালতের কাছে এই রিপোর্টও জমা দেন।

এদিন ছিল ওই মামলার শুনানি। এজলাসে শুনানির কাজ শেষ হলে জেলার অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সন্দীপ চৌধুরি কাটোয়া এসিজেএম আদালতে মৌসুমীদেবীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেন। মিথ্যা অভিযোগ আনা,  মিথ্যা সাক্ষী দেওয়া-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৩, ১৯৫, ২০৯ এবং ২১১ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে ১৯৫ ধারা অনুযায়ী মীরাদেবীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে যে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ার কথা ছিল, সেই একই সাজা হতে পারে মৌসুমী দাসের।

উল্লেখ্য, কাটোয়া শহরে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কবিরাজপাড়ায় মৌসুমী দাসের শ্বশুরবাড়ি। বাপের বাড়ি কাটোয়ার সাত নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গামন্দির পাড়ায়। বছর ছয়েক আগে প্রেম করে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামীরা দু'ভাই। তবে পৃথক থাকেন দু'জনেই। শাশুড়ি, স্বামী ও ৫ বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন মৌসুমী। স্বামীর সঙ্গে অনেকদিন ধরেই বনিবনা ছিল না তাঁর। মৌসুমিদেবী কাটোয়ার একটি দোকানে কাজ করেন। শাশুড়ির সঙ্গেও ঝামেলা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। তারই জেরে শাশুড়িকে জব্দ করতে মিথ্যা অভিযোগ আনেন বলে জানতে পারে পুলিশ।