মমতার হিন্দু ধর্ম ছেড়ে দেওয়া উচিত, মন্তব্য রাজস্থানের মন্ত্রীর


গোটা দেশে 'তালিবানি শাসনে'র পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। ২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এহেন মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে রাজস্থানের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী বলেন, ''হিন্দু ধর্ম ছেড়ে দেওয়া উচিত মমতার''। 
     
রাজস্থানের শ্রমমন্ত্রী যশবন্ত সিং যাদব বলেন, ''ওনার কোনও জ্ঞান নেই। দেশকে উনি ভালবাসেন না।'' হিন্দু সংগঠনগুলিকে উগ্র আখ্যা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিন্দাজনক মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করেছেন যশবন্ত। এরপরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর পরামর্শ, ''আপনার মানসিক অবস্থা ভাল নেই। হিন্দু ধর্ম ছেড়ে দেওয়া উচিত ওনার''। 

আলোয়ারে গরু চোর সন্দেহে একজনের মৃত্যুর ঘটনার পর বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে বলেছিলেন, বিজেপি হিন্দু ধর্মের কিছুই বোঝে না। ওরা শুধু বিভেদ ছড়িয়ে অশান্তি ছড়াতে জানে। তিনি সব 'দেবতা'র উপরেই ভরসা রাখেন।

আলোয়ারের ঘটনার পর ঘুরিয়েই স্থানীয়দের সমর্থন করেছিলেন রাজস্থানের শ্রমমন্ত্রী। এদিনও তাঁর অবস্থানে অনড় থেকে যশবন্ত সিং যাদব বলেন,''আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও হাতে নেই। কাউকে হত্যা করা অত্যন্ত নিন্দাজনক। কিন্তু একইসঙ্গে আমি বলব, গরুর সঙ্গে জড়িয়ে হিন্দুদের ভাবাবেগ। দেশের সম্প্রীতি ও একতার স্বার্থে গো-পাচার ও হত্যা বন্ধ করুক সংখ্যালঘু ভাইয়েরা''।

এদিন আবার মেদিনীপুর কলেজ ময়দানের সভায় বিজেপির 'হিন্দুত্ব'কে কটাক্ষ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, আমাদের দলেও অনেক রামভক্ত রয়েছেন। আমরা ধর্মকে রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করি না। বিজেপি ধর্ম বিক্রি করে রাজনীতি করে। এরা ধর্মের নামে বিভাজন তৈরি করে। দুর্নীতি করে বিজেপি।'' তিনি আরও বলেন, 'হিন্দু ধর্ম অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শেখায়। আমার হিন্দুত্ব বিভাজন করতে শেখায় না।' হিন্দুদের জন্য আদৌ মোদী কোনও প্রকল্প করেছেন কিনা, এদিন সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন অভিষেক। দেশে 'একনায়কতন্ত্র' চলছে বলে তোপ দাগেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। 

সংসদে রাহুল গান্ধীও হিন্দুত্বের প্রসঙ্গে আরএসএস-বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন। অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কে কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন, আরএসএস-বিজেপি তাঁকে হিন্দুত্বের অর্থ শিখিয়েছে। তিনি বুঝতে পেরেছেন, আসল হিন্দুত্ব ওটা নয়।  

লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি যে হিন্দুত্বের তাস খেলে পালে হাওয়া আনার কৌশল নিয়েছে, তার আঁচ পাচ্ছে বিরোধীরাও। তাই পাল্টা নিজেদের 'আসল হিন্দু' হিসেবে তুলে ধরার কৌশল নিয়েছে তারা, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।