বিয়েতে ‘না’, তরুণীকে বাড়ির সামনে গুলি করে খুন কোন্নগরে



বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাড়ি ঢুকে তরুণীকে গুলি করে খুন করল এক যুবক। বাধা দেওয়ায়, তরুণীর বাবা-মাকেও বন্দুকের বাট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয় আততায়ী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হুগলির কোন্নগরের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শুভলগ্না চক্রবর্তীর। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর বাবা তুষার চক্রবর্তী ও মা শুভ্রাদেবী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত যুবক সুলতান আলির খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।

বুধবার সন্ধ্যায় মেয়ে শুভলগ্না এবং স্ত্রী শুভ্রাকে নিয়ে কাছাকাছি এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন কোন্নগর পুরসভারই অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার তুষার চক্রবর্তী। কোন্নগরের অলিম্পিক মাঠের কাছে নিজেদের বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে দেখেন, গেটের সামনে অপেক্ষা করছে পাশের চটকল পাড়ার যুবক শেখ সুলতান আলি। ওই যুবককে খুব ভাল করেই চেনে চক্রবর্তী পরিবার। কারণ, ছয়-সাত বছর আগে শুভলগ্নার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল সুলতানের। সেই সম্পর্ক নিয়ে সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে টানাপড়েন চলছিল বিস্তর।

বাড়ির দরজাতেই সুলতানকে দেখে তাঁর আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেন তুষার। অভিযোগ, সুলতান শুভলগ্নাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাতে বাধা দেন তুষারবাবু। শুভলগ্নাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি বিয়ে করতে রাজি নন। তারপরই মেজাজ হারান সুলতান। কোমর থেকে বন্দুক বের করে শুভলগ্নার মাথায় আঘাত করেন। মেয়েকে মারধর করতে দেখে তাকে বাঁচাতে যান তুষার এবং শুভ্রা। বাধা পেয়ে উন্মত্তের মত বন্দুকের বাট দিয়ে তুষার ও শুভ্রার মাথায় আঘাত করে সুলতান। তাঁরা লুটিয়ে পরতেই শুভলগ্নাকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করেন সুলতান।ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ফেরার হয়ে যান সুলতান।



শুভলগ্নার আহত বাবা-মা। 

গুলির শব্দ শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তুষারবাবু ও শুভ্রাদেবীকে উত্তরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চক্রবর্তী পরিবারের দাবি, কয়েক বছর ধরেই সুলতান বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিল শুভলগ্নাকে। কিন্তু তিনি রাজি হচ্ছিলেন না। এই নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। স্থানীয় পুরপ্রধান থেকে শুরু করে বিধায়ক সবাইকে জানিয়েও সুরাহা হয়নি।

অন্যদিকে সুলতানের পরিবারের দাবি, কয়েকবছর আগে দু'জনের রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়। কিন্তু পরিবারের চাপে শুভলগ্না পাকাপাকি সুলতানের ঘরণী হতে পারছিলেন না। আর সেখানেই আপত্তি ছিল সুলতানের। পাল্টা চক্রবর্তী পরিবারের অভিযোগ, সুলতান নিজের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঘনিষ্ঠতা করেছিল শুভলগ্নার সঙ্গে। আর সেটা জানার পরই সম্পর্ক থেকে দূরে সরে আসেন শুভলগ্না।