ঋতুস্রাবের সময় মন্দিরে কেন ঢোকা যায় না? জেনে নিন বিজ্ঞানসম্মত কারণ


জন্ম থেকে অনেকেই কুসংস্কারের বশবর্তী। বাড়ির পরিবেশই তাদের কুসংস্কারের প্রতি মনোনিবেশ করতে একপ্রকার বাধ্য করে। কেউ এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসে, কেউ চেষ্টা করেও পারেন না। আবার কেউ চেষ্টাটাই করেন না। তাই হাজার আধুনিক হয়ে যাক, ভারতীয়দের জীবনে কুসংস্কার এখনও চেপে বসে রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে এমন কিছু রীতি রয়েছে যা এখন কুসংস্কারের আওতায় পড়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পিছনে রয়েছে বিজ্ঞানসম্মত কারণ।

সূর্যাস্তের পর নখ না কাটা

অনেক সময় বাড়ির গুরুজনেরা নিদান দেন, সূর্যাস্তের পর নখ কাটা যাবে না। মনে হয়, কোনও কারণ তো নেই! ক্ষতিও হয় না। তাহলে কেন এমন নিয়ম? কিন্তু আগেকার দিনে বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল সীমিত। তারও আগে বিদ্যুৎ তো ছিলই না। ফলে সূর্যাস্তের পর কমে যেত আলো। ফলে নখ কাটতে যেমন অসুবিধা হত, তেমনই ঠিকমতো পরিষ্কার করতে না পারলে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনাও থাকত।


শ্মশানযাত্রা থেকে ফিরে স্নান

এটা তো অবশ্যম্ভাবী। কুসংস্কার মনে হলেও এর পিছনে কিন্তু গভীর কারণ রয়েছে। শ্মশানে থাকে নানা রকম জীবাণু। সেই জীবাণু বাড়ির পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। স্নান করে নিলে জীবাণুগুলিও ধুয়ে যায়। তাই বহুযুগ থেকে চলে আসছে এই প্রথা।



লেবু ও লঙ্কা

শয়তানের খারাপ দৃষ্টি থেকে বাঁচতে লেবু ও লঙ্কা ঝোলানোর কথা বলা হয়। এতে নাকি খারাপ আত্মারা আসতে পারে না। কিন্তু আসল কথা হল, লেবু ও লঙ্কা, দু'টোই পোকামাকড় তাড়াতে সমানভাবে কাজে দেয়। বরাবর এই কারণেই এই দু'টি জিনিস ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কালে কালে তা কুসংস্কার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।



রাতে পিপুল গাছের কাছে যাওয়া মানা

রাতে নাকি পিপুল গাছে ভূতের আনাগোনা চলে। তাই মেয়েদের তো বটেই, ছেলেদেরও ওই গাছের কাছে যাওয়া মানা। আসল ঘটনা হল, রাতের বেলা গাছ কার্বন-ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করে। তাই শুধু পিপুল গাছ কেন, যে কোনও গাছের কাছে গেলেই অস্বস্তি হতে পারে।


ঋতুস্রাবের সময় মন্দিরে ঢোকা নিষেধ

এটা তো আজকের দিনে সবচেয়ে চর্চিত বিষয়। ঋতুস্রাবের সময় কেন মন্দিরে ঢুকতে নেই, কেনই বা বাধা দেওয়া হয়, তা নিয়ে অনেকেই তর্ক করেন। এর ঘোর বিরোধিতা করেন। করাই উচিত। কিন্তু এই নিয়ম যখন প্রচলিত হয়েছিল, তখন তার পিছনে কারণ ছিল। ঋতুস্রাবের সময় মহিলাদের শরীরে যন্ত্রণা হয়। সেই যুগে ব্যথা কমানোর ওষুধ বা স্যানিটারি প্যাড ছিল না। ফলে পিরিয়ডের সময় মহিলাদের সমস্যা হত। অন্যদিকে মন্দিরে পুজো মানে তা দীর্ঘ সময় চলবে। এটা যাতে মহিলাদের না করতে হয়, যাতে তারা বাড়িতে বিশ্রাম নিতে পারে, তার জন্যই এই নিয়মের প্রচলন হয়। আর এটিকে হাতিয়ার করেই বছরের পর বছর ধরে ঋতুস্রাবের সময় মন্দিরে মহিলাদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।