সৎ মাকে কুপিয়ে খুনের পর থানায় গেল যুবক, হাওড়ায় চাঞ্চল্য


হাওড়া: সৎ মাকে কুপিয়ে খুনের পর থানায় গিয়ে আত্মসমপর্ণ করল যুবক। ধৃতের নাম চন্দন প্রসাদ (২৬)। মৃত মহিলার নাম বাসন্তীদেবী (৫৪)। চন্দন ও তার দ্বিতীয়পক্ষের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে কি কারণে খুনের ঘটনা ঘটল তা নিয়ে মুখে কুলুপ প্রতিবেশীদের। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার ৭২/১০ বনবিহারী রোডে।

পুলিশ জানিয়েছে, বনবিহারী রোডের আবাসনের একতলায় প্রসাদ পরিবারের বসবাস। ধৃত চন্দনের বাবা শিবদাসন প্রসাদ (৬২)। তিনি জুটমিলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তাঁর দু'টো বিয়ে। প্রথমপক্ষের স্ত্রীর মৃত্যু হলে শিবদাসন বাসন্তীদেবীকে বিয়ে করেন। বাসন্তীদেবীর তিন মেয়ে। তাঁদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে প্রথমপক্ষের স্ত্রীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। সেই মেয়েরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বড় ছেলে বিমল প্রসাদ ভিনরাজ্যে কাজ করে। বাড়িতে থাকে ছোট ছেলে চন্দন প্রসাদ। এই চন্দনেরও আবার দুটো বিয়ে।  প্রথম বউ পালিয়ে গিয়েছে বেশ কিছুদিন হল। ফের বিহারের জাহানাবাদে গিয়ে নতুন বিয়ে করে সে। মাস খানেক আগে নতুন বউকে নিয়ে এসেছে হাওড়ার বাড়িতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেশীর বক্তব্য, এই বউ বাড়িতে ঢোকার পরই গন্ডগোলের সূত্রপাত। এমনিতে সাতেপাঁচে থাকেন না বৃদ্ধা বাসন্তীদেবী। তবে সংসারের কাজকর্ম শেষ হলে তাঁর একমাত্র বিনোদন প্রতিবেশী মেয়ে বউদের সঙ্গে লুডো খেলা। তাঁদের বাড়ির সামনেই বসে লুডোর আসর। এদিন দুপুরেও পাড়ার বউরা দলবেঁধে এসে দেখেন বাসন্তীদেবী তখনও আসেননি। নতুন বউকে শাশুড়ির কথা জানতেও চান। বউয়ের দাবি, শাশুড়ি বাজারে গিয়েছে। দুপুরবেলা বাজারে যাওয়ার খবরে হতবাক প্রতিবেশী গিন্নিরা যখন কানাঘুষো করছেন ততক্ষণে পুলিশ পৌঁছে গিয়েছে প্রসাদ বাড়ির সামনে।

এদিকে থানায় ততক্ষণে আত্মসমপর্ণ করেছে চন্দন। বাড়ির ভিতরে গিয়ে দেখা যায় বাসন্তীদেবীর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে ঘরের মধ্যেই। মাথায় আঘাতের পাশাপাশি গলার নলিও কাটা। জেরায় ধৃত জানিয়েছে, শাবলের বাড়িতে খুন করার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলার নলি কেটে দেয় সে। গোটা ঘটনাই জানত স্ত্রী। তবে সেও মুখ খোলেনি। দু'জনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার সময় বাড়ি ছিলেন না মৃতার স্বামী শিবদাসন প্রসাদ। কিন্তু কি কারণে খুন তা এখনও জানা যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। আপাত শান্ত, আমুদে বাসন্তীদেবীর এহেন পরিণতিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে।