হকার সমস্যার সমাধান অধরা


পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে ২৪ ঘণ্টা পরে দোকান খুললেন সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের বিক্ষুব্ধ হকারেরা। দোকান সরানো আটকাতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন হকারেরা। যদিও নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শুক্রবারই বৈঠক হয়েছিল। বিকল্প জায়গাও হকারদের দেখানো হয়েছে। তবে হকারদের বক্তব্য, নতুন জায়গা ব্যবসার পক্ষে অনুকূল নয়। ফলে হকার সমস্যার সমাধান নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গেল। হকারেরা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু সমস্যা ঠিক কোথায়? ৪৩২ একরের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকে রাস্তা মাত্র ১৭ কিলোমিটার। ফুটপাত বিশেষ চওড়া নয়। ফলে ফুটপাতে দোকান বসালে পথচারীদের চলাচলের জায়গা থাকে না। আবার জমির সঙ্কুলানে হকারদের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করাও সমস্যার। দীর্ঘ দিন ধরেই নবদিগন্ত পরিকল্পনা করেছে ফুডকোর্ট গড়ে সেখানে হকারদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। যেমন একিউ ব্লকের ১১ নম্বর প্লটে কাজ চলছে।

হকারদের প্রশ্ন, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের টিফিনের সময় খুবই সীমিত। ফলে তাঁরা বেশি দূর যেতে পারবেন না। ফলে একটি জায়গায় হকারদের পুনর্বাসন করা হলে সমস্যা কমবে না।

হকারদের দাবির যেমন বাস্তবতা রয়েছে তেমন পাল্টা যুক্তিও রয়েছে। কারণ ফুটপাতে পথচারীর চলাচলও প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। তেমনই শিল্পতালুকের বিভিন্ন জায়গায় ফুডকোর্ট তৈরি করার মতো জমিরও অভাব রয়েছে বলে নবদিগন্ত সূত্রের খবর। পাশাপাশি রাস্তার ধারের দোকানের আবর্জনা নিকাশি নালায় ফেলার অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয়দের কথায়, ওই অস্থায়ী দোকানগুলির প্লাস্টিকের ছাউনিতে আগুন লাগলে তা বিপজ্জনক হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের কথায়, দু'পক্ষেরই যুক্তি রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের রাস্তা খোঁজা প্রয়োজন। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ হকার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ভবতোষ সরকার বলেন, ''আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু আলোচনার আগেই যে ভাবে মুখে না বলে কার্যত উচ্ছেদের ঘোষণা হল তা মানা যাচ্ছে না। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা মেটানো সম্ভব।''

বিধায়ক সুজিত বসু বলেন, ''পথ নিরাপত্তা, সৌন্দর্যায়নের বিষয় যেমন রয়েছে তেমনই সরকারের নীতি মেনে হকারদের সমস্যারও সমাধান করা হবে। উচ্ছেদের প্রশ্ন নেই। তবে নতুন করে কাউকে বসতে দেওয়া হবে না।''