অন্ধ বিশ্বাস নয় সোশ্যাল মিডিয়াকে, সতর্কবার্তা দীপক মিশ্রের


সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও লেখা, ছবি বা ভিডিয়ো পেলেই তাতে অন্ধের মতো বিশ্বাস না করার পরামর্শ দিলেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট করার ক্ষেত্রেও যে সতর্ক হওয়া দরকার, সে কথাও বিশেষ ভাবে মনে করিয়ে দেন তিনি।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনিতে একের পর এক মৃত্যু ঘটে চলেছে। গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট এর তীব্র নিন্দা করে বলেছে, এই ভয়াবহ জনতারাজ বরদাস্ত করা যায় না। লৌহমুষ্টিতে একে দমন করতে হবে। কোনও মতেই এমন কাজকে দেশের 'নয়া নিয়ম' হয়ে উঠতে দেওয়া যায় না। উন্মত্ত জনতার মারধরে লিপ্ত হওয়ার মতো ঘটনা রুখতে আইন করারও পরামর্শ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এ ব্যাপারে মোদী সরকার তার মতো করে এগোচ্ছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ বিচারপতি মনে করেন মানুষকেও অনেক বেশি সজাগ হতে হবে। আজ এক অনুষ্ঠানে এই মত প্রকাশ করেন তিনি। কারণ, সম্প্রতি দেখা গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো লেখা মানুষকে খেপিয়ে তুলছে, হিংসাত্মক কাজে প্ররোচিত করছে।

 তাঁর কথায়, ''এটা ঠিক যে মত প্রকাশের স্বাধীনতাই সব থেকে বড় কথা। এটি এক মূল্যবান অধিকার। কিন্তু সেই অধিকার ভোগ করা পাশাপাশি দায়িত্বশীলও হতে হবে। সংবাদমাধ্যম ও বিচার ব্যবস্থার সম্পর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে তাঁর বক্তব্য, ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে সকলের। কিন্তু তার জন্য দরকার মুক্ত ও অবাধ বাতাবরণ। আর দরকার সুবিচার চান এমন 'প্রসিকিউটর' তথা সরকার পক্ষের আইনজীবী। তাঁর এই মন্তব্যকে বিশেষ অর্থবহ মনে করছেন রাজনীতির, বিশেষ করে বিরোধী শিবিরের লোকজন।

বিচারপতি মিশ্রের মতে, সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করাটা খুব সোজা। কিন্তু সেটা অনুচিত। কারণ, জনগণকে সব তথ্য জানানোর বিপুল দায়িত্ব পালন করে দেশে এই চতুর্থ স্তম্ভ। তবে একই সঙ্গে বস্তুনিষ্ঠ থাকারও দায়িত্ব রয়েছে সংবাদমাধ্যমের। তবে বাইরে থেকে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার বদলে আত্মোপলব্ধির উপরেই জোর দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ''আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, বস্তুনিষ্ঠ থাকার জন্য সংবাদমাধ্যমের কোনও নির্দেশিকার দরকার নেই। নিজেদের দিশা তারা নিজেরাই ঠিক করুক এবং সেটা মেনে চলুক।''