গুজরাতে দাঙ্গা বাধানোর দায়ে হার্দিক পটেলের দু’বছরের জেল, পেলেন জামিনও


হার্দিক পটেল।
 
২০১৫ সালে দাঙ্গা বাধানোর মামলায় হার্দিক পটেলকে দু'বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল গুজরাতের একটি আদালত। হার্দিকের সঙ্গে তাঁর দুই সঙ্গীকেও একই সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। তিন জনকেই জরিমানা করা হয় ৫০ হাজার টাকা। যদিও পরে হার্দিক ও তাঁর সঙ্গীরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। আদালতের রায়ের আগেই ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো বার্তায় সমর্থকদের শান্ত থাকার আর্জি জানিয়েছেন হার্দিক।

জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে আন্দোলনের সময় বিষ্ণগড়ের বিজেপি বিধায়ক হৃষিকেশ পটেলের বাড়ি ভাঙচুরে নেতৃত্ব দেন হার্দিক। সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ, দাঙ্গায় প্ররোচনা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয় হার্দিক ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। সেই মামলাতেই বুধবার রায় দিয়েছে বিষ্ণগড় আদালত। সরকারি আইনজীবী চন্দ্র সিংহ রাজপুত জানিয়েছেন, ''ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮ এবং ১৪৯ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে হার্দিক ও তাঁর দুই সঙ্গী লালজি পটেল ও এ কে পটেলকে দু'বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন বিচারক। একইসঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে।'' পরে ওই আদালতেই তাঁদের জামিন মঞ্জুর হয়।
পতিদারদের সংরক্ষণের দাবিতে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে আন্দোলন শুরু করে পতিদার অনামত আন্দোলন সমিতি। এই সমিতির প্রতিষ্ঠাতা হার্দিক নিজেই। জুলাই থেকে সেই আন্দোলন শুরু হয়। সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে প্রায় গোটা গুজরাতেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ২৫ অগস্ট পতিদার ক্রান্তি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে বিশাল সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। সেই আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কার্যত গোটা গুজরাত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশের গুলি ও দাঙ্গায় মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়। গ্রেফতার করা হয় হার্দিককে। পরে জামিনে ছাড়া পান তিনি।

কিন্তু গুজরাত জুড়ে একাধিক জায়গায় হার্দিকের নামে মামলা হয়। তার মধ্যে অন্যতম এই বিষ্ণগড়ে বিধায়কের বাড়িতে হামলার ঘটনা। সেই মামলাতেই বুধবার হার্দিক ও তাঁর দুই সঙ্গীকে দু'বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন কি-না, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন হার্দিকের আইনজীবী।

জানা যায়, ২০১৫ সালেই হার্দিকের বোন একটি জাতীয় স্তরের স্কলারশিপের পরীক্ষা দেন। কিন্তু তিনি সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি এবং ওই স্কলারশিপও পাননি। কিন্তু হার্দিক জানতে পারেন, তাঁর বোনের এক বান্ধবী তাঁর চেয়ে কম নম্বর পেয়েও ওবিসি ক্যাটেগরিতে সংরক্ষণের আওতায় ওই স্কলারশিপের যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এর পরই আন্দোলনের প্রস্তুতি এবং পতিদার অনামত আন্দোলন সমিতি গঠন করেন।

চাকরি ও পড়াশোনায় পতিদারদের ওবিসি-র আওতায় সংরক্ষণের সেই দাবি এখনও চলছে। সম্প্রতি হার্দিক ঘোষণা করেছেন, দাবি আদায়ে ফের আগামী ২৫ অগস্ট থেকে টানা অনশনে বসবেন। একটি ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেছেন, এটাই হবে তাঁর শেষ আন্দোলন। হয় দাবি আদায় হবে, না হলে তাঁর জীবন শেষ হবে।