মেয়ের মাকে 'সঙ্গ' দিতে হবে, তবেই মিলবে 'কন্যাশ্রী' ফর্ম!


কন্যাশ্রীর ফর্ম পেতে গেলে কন্যার মাকে স্কুলকর্মীকে সঙ্গ দিতে হবে। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল স্কুলের গ্রুপডি কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের কাটোয়ায়।

বর্ধমানের কাটোয়ার চন্দ্রপুর সেন্ট্রাল স্কুল। সেই স্কুলেই উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ওই কিশোরী। ওই ছাত্রী জানিয়েছে, কয়েকদিন আগে সে কন্যাশ্রীর ফর্ম আনতে যায়। সেইসময় স্কুলের গ্রুপডি কর্মী সদানন্দ ধারা তাকে সেই ফর্ম না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়। এরপরেও বেশ কয়েকবার ফর্ম তুলতে যায় সে। কিন্তু প্রতিবারই তাকে ফিরিয়ে দেয় অভিযুক্ত গ্রুপডি কর্মী সদানন্দ ধারা। এরপর সদানন্দ তাকে বাড়িতে ফর্ম আনতে যেতে বলে। সদানন্দের কথা শুনে ওই ছাত্রী তার বাড়িতেই কন্যাশ্রীর ফর্ম আনতে যায়। এবারও তাকে বেশ কয়েকবার ঘোরায় সদানন্দ। তারপর সে ওই ছাত্রীকে জানায়, তার কাছে কোনও ফর্ম নেই।

ছাত্রী বাড়ি ফিরে মাকে সবকথা খুলে বলে। মেয়ের মুখে সবকথা শুনে ওই ছাত্রীর মা নিজেই যায় সদানন্দ ধারার বাড়িতে। অভিযোগ, সেইসময়ই সদানন্দ ওই ছাত্রীর মাকে কুপ্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ। বলে, কন্যাশ্রীর ফর্ম নিতে গেলে ওই ছাত্রীর মাকে তাকে সঙ্গ দিতে হবে। তার সঙ্গে থাকতে হবে।

এরপরই এই ঘটনার কথা স্কুলের শিক্ষকশিক্ষিকাদের জানায় ওই ছাত্রীর পরিবার। ঘটনার কথা জানিয়ে কাটোয়া মহকুমা শাসকেরও দ্বারস্থ হয় তারা। কাটোয়ার মহকুমা শাসক সৌমেন পাল জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর পরিবারকে কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তিনি বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরই অসহায় ওই ছাত্রীর মা কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত, রাজ্যের কন্যাসন্তানদের জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটি মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্প বিশ্বের দরবারে প্রশংসা কুড়িয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে মিলেছে স্বীকৃতি।  রাষ্ট্রসংঘের জন পরিষেবায় প্রথম স্থান জিতে নিয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। রাজ্যের কন্যাসন্তানদের অধিকার রক্ষাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। বাল্য বিবাহ রোখা, ড্রপ আউট আটকানো, নারীশিক্ষার অধিকার প্রভৃতি ক্ষেত্রে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে কন্যাশ্রী।

এই মুহূর্তে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে ৪০ লাখেরও বেশি কন্যাসন্তান। এই প্রকল্পের আওতায় ২ ধরনের বৃত্তি পেয়ে থাকেন ছাত্রীরা। ১৮ বছরের নীচে পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে বার্ষিক বৃত্তি হিসেবে তাদের দেওয়া হয় ১০০০ টাকা। অন্যদিকে, ১৮র বেশি ও ১৯এর কম বয়সী ছাত্রীদের ক্ষেত্রে দেওয়া হয় এককালীন ২৫,০০০ টাকা।