মৃত্যুর আগে কী করছিলেন বুরারি পরিবারের সদস্যরা? ধরা পড়ল সিসিটিভি ফুটেজে


দিল্লির বুরারি তখন ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর ভাটিয়া পরিবার গণ আত্মহত্যার। একে একে টুল আর দড়ি জমা করছিলেন বাড়িতে। শনিবার মৃত্যুর আগে ভাটিয়া পরিবারের শেষ সিসিটিভি ফুটেজে এটাই দেখা গিয়েছে। গণ আত্মহত্যার জন্য যে টুল এবং দড়ি ব্যবহার করেছিলেন, ওই রাতেই সেগুলো জোগাড় করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের।

একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজটা এরকম, রাত ১০টা ১৫ মিনিটে পরিবারের ১২ বছরের ধ্রুব এবং ১৫ বছরের শিবম স্থানীয় একটি আসবাবপত্রের দোকানে যায়। সেখান থেকে দড়ি নিয়ে আসছে তারা। সিলিংয়ের রড থেকে ঝোলার সময় এই দড়ির সাহায্যই নিয়েছিলেন ১১ জন।

তার আগে রাত ১০টার সময় এক প্রতিবেশীর বাড়ির বাইরের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে সবিতা এবং তাঁর মেয়ে নিতুকে। তাঁরা অনেকগুলো টুল নিয়ে বাড়ির দিকে হেঁটে আসছেন। পুলিশ জানিয়েছে, গলায় দড়ি লাগিয়ে ঝোলার বা ঝোলানোর জন্য ৫টি টুল ব্যবহার করা হয়েছিল ওই রাতে।

রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে পাশের একটি দোকান থেকে ২০টা রুটি ডেলিভারি দিয়ে যান এক যুবক। রাত ১০টা ৫৭ মিনিটে নারায়নী দেবীর বড় ছেলে ভুবনেশ তাঁদের পোষ্যকে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। রাত ১১টা ৪ মিনিটে তাঁরা ফিরে আসেন।

মঙ্গলবার সকালেও ভাটিয়া বাড়িতে তদন্তের জন্য গিয়েছিল পুলিশ। আরও কিছু নোট উদ্ধার হয়েছে। তা থেকে পুলিশ জেনেছে, ২০০৭ সালে বাবার মৃত্যুর কয়েক মাস পর থেকেই ভাটিয়া পরিবার এই সমস্ত ধর্মীয় আচার এবং অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস করতে শুরু করে। বাবার মৃত্যুতে সব থেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন ললিতই। পরিবারের বাকিরা ললিতের মধ্যেই তাঁদের বাবা ভোপাল সিংহকে দেখতে পেতেন। নারায়ণী দেবীর ছেলে-বউমা ললিতকেই 'ড্যাডি' বলে সম্বোধন করতেন।

ডায়েরির পাতা থেকে পুলিশ আরও একটি বিষয় জানতে পেরেছে। বুরারি পরিবার কোনওভাবেই মৃত্যুকে বরণ করতে চাননি। উল্টে ভেবেছিলেন মোক্ষলাভ করে পুণর্জন্ম হবে তাঁদের। তাঁরা ভেবেছিলেন এতে তাঁদের সমস্ত সমস্যা মিটে যাবে। আর সফল হলে ললিতের স্ত্রী টিনার বোন মমতাদেবীর উপরেও এর প্রয়োগ করবে, এটাও ঠিক কর ফেলেছিলেন। কারণ মমতাদেবী বর্তমানে কিছু সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। যদিও তাঁকে নিয়ে ভাটিয়া পরিবার যে এ সব ভেবেছিল, তা ঘুণাক্ষরেও জানতেন না মমতাদেবী।