প্রকাশ্যে পুড়িয়ে খুন ছাত্রকে, অজ্ঞাত পরিচয় দুই কিশোরের খোঁজে পুলিশ


প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ দশম শ্রেণির ছাত্র। ওই ছাত্রকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ। অভিযোগ উঠল অজ্ঞাতপরিচয় দুই কিশোরের বিরুদ্ধে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হল আক্রান্তের। মৃতের নাম দীনেশ সিং বিস্ত (১৫)। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে হিমাচল প্রদেশের আলমোড়ার রানিথেত এলাকায়।

জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো এদিন সকালেও প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিল ওই কিশোর। বাড়ি থেকে ২০০ মিটারের মধ্যেই ঘটে ঘটনাটি। অভিযোগ, জোর করে অজ্ঞাতপরিচয় দু'জন তার গায়ে কেরোসিনের জার ঢেলে দেয়। তারপর লাইটার দিয়ে অগ্নিসংযোগও করে। আক্রান্ত কিশোর সাহায্যের জন্য চিৎকার শুরু করতেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুই অভিযুক্ত। তখনও ভাল করে ভোরের আলো ফোটেনি। প্রতিবেশীরা মর্নিংওয়াকে বেরিয়েই আক্রান্ত দীনেশকে চিনতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি অগ্নিদগ্ধ কিশোরকে রানিখেতের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্থানীয় হালদওয়ান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরের।

এই প্রসঙ্গে রানিখেতের কোতয়ালি থানার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্তা নারায়ণ সিং জানান, অজ্ঞাতপরিচয় দু'জন ওই ছাত্রের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। অভিযুক্তরা যে কারা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কেন না এই মর্মান্তিক ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না। তবে মৃত্যুর আগে এক জবানবন্দিতে তার উপরে হওয়া আক্রমণের কথা বলেছে ওই কিশোর। সে বাবা-মাকে জানায়, দুই অপরিচিত নাবালক তার গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। মৃত ছাত্রের বাবা তারা বিস্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। রানিখেত বাজারে তারাবাবুর একটি দোকান রয়েছে। তিনি জানান, ছেলে দীনেশ ভীষণ শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের। কারওর সঙ্গেই কখনও ঝামেলা ঝঞ্ঝাটে যায় না। তাই কোনও শত্রুও নেই তার। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, আত্মহত্যা করে থাকতে পারে ওই ছাত্র। কেননা শহরের নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়লেও দীনেশ পড়াশোনায় মধ্যমানের। কখনওই আহমারি ফলাফল তার ছিল না। হয়তো সহপাঠীদের সঙ্গে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে বলে আত্মঘাতী হতে পারে সে। গোটা ঘটনাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

বলাবাহুল্য, হিমাচল প্রদেশের সংশ্লিষ্ট এলাকায় এমন ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা প্রথম নয়। গত ডিসেম্বরেই দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে স্কুল চত্বরেই জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল। মৃত ছাত্রের নাম রাকেশ কানওয়াল। মৃত্যুর আগে আক্রান্ত ছাত্রটি জানিয়েছিল, মুখোশ পরিহিত চার ব্যক্তি তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। এই ঘটনার পর তদন্ত হলেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ফের একইভাবে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।