পেত্নী তাড়ানোর নামে মহিলাকে পাঁচদিন ধরে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার সাগরেদ-সহ সাধু


মালদহ: পেত্নী তাড়ানোর নাম করে এক মহিলাকে পাঁচদিন ধরে আশ্রমে আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক স্বঘোষিত সাধু ও তার দুই সাগরেদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের রতুয়া থানার সামসি এলাকার একটি আশ্রমে। নির্যাতিত ওই মহিলার বাড়ি নদিয়া জেলায়। অসমের কামাক্ষ্যা থেকে নদিয়ার ওই গৃহবধূকে পেত্নী তাড়ানোর নাম করে মালদহে ডেকে আনা হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ভোররাতে সামসির ওই আশ্রম থেকে সাধু-সহ মোট তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। নির্যাতিতাকে শুক্রবার মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠায় পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অম্বুবাচি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও দুই সঙ্গী ধনাই রায় ও শঙ্কর ভগতকে নিয়ে কামাক্ষ্যায় গিয়েছিল আশ্রমের সাধু বাচ্চু গিরি মহারাজ। কামাক্ষ্যায় ধনাই ও শঙ্করের সঙ্গে ওই মহিলার পরিচয় হয়। নদিয়ার ওই গৃহবধূ একাই কামাক্ষ্যায় গিয়েছিলেন। তাঁকে "পেত্মী ধরেছে" বলে নদিয়ার এক ওঝা নিদান দিয়েছিল। কিন্তু সেই ওঝার ঝাড়ফুঁকে কাজ না হওয়ায় ওঝারই নির্দেশে একাই কামাখ্যায় যান মহিলা। সেখানে ধনাই ও শঙ্করের সঙ্গে মহিলার প্রথম আলাপ হয়। দুই সাগরেদই মহিলার সঙ্গে তাদের সাধুবাবার পরিচয় করিয়ে দেয়। তারাই মহিলাকে বলে, "আমাদের সাধুবাবা অনেক মহিলার পেত্নী তাড়িয়েছে। বাবার আশ্রমে গেলে সমস্যা মিটে যাবে। কয়েকদিন সাধুবাবার আশ্রমে থাকতে হবে।"

এভাবেই পেত্নী তাড়ানোর কথা বলে পাঁচদিন আগে নদিয়ার ওই বধূকে কামাক্ষ্যা থেকে মালদহের আশ্রমে নিয়ে আসে সাধু বাচ্চু মহারাজ। সেখানেই পেত্নী তাড়ানোর নাম করে মহিলাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার আশ্রম থেকে কোনও রকমে পালিয়ে বাসিন্দাদের সহায়তায় সামসি পুলিশ ফাঁড়িতে হাজির হন নির্যাতিতা। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। তারপরেই ভোররাতে আশ্রমে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় সাধু-সহ তিনজনকে। ডাক্তারি পরীক্ষার পর নির্যাতিতাকে নদিয়ায় পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পুলিশ।

মালদহের চাঁচোল মহকুমার এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই আশ্রমের বিষয়েও বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আশ্রমটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় গোটা উত্তর মালদহজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।