প্রৌঢ়াকে বেঁধে লুঠ, ধৃত তিন পড়শি


ঘর থেকে ভেসে আসছে টিভির আওয়াজ, সঙ্গে শোনা যাচ্ছে গোঙানির শব্দ!

মঙ্গলবার রাতে বেশ কিছুক্ষণ ধরে এমন আওয়াজ পাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। শেষে ওই ঘরে ঢুকে দেখেন মেঝেতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পরে রয়েছেন গৃহকর্ত্রী। মুখেও শক্ত ভাবে বাঁধা রয়েছে ওড়না। ঘরের আলমারি লন্ডভন্ড।

মঙ্গলবার রাতে এমন ঘটনা ঘটেছে নিমতা থানার উত্তর দমদম এলাকায়। তবে বাঁধন খুলে দিতেই ওই প্রৌঢ়া অভিযোগের আঙুল তোলেন প্রতিবেশী এক পরিবারের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানায়, কল্পনা মণ্ডল নামের ওই প্রৌঢ়া দাবি করেছেন, মুখে কালো কাপড় বেঁধে দুই দুষ্কৃতী এলেও তারা যে ওই পাড়াতেই থাকেন, তা তিনি চিনতে পেরেছেন। সেই অভিযোগ পেয়ে রাতেই পুলিশ ওই এলাকা থেকে বিশ্বনাথ দাস, তাঁর স্ত্রী অপর্ণা দাস এবং জামাই দীপন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে। যদিও বিশ্বনাথবাবুর ছেলে শুভ ঘটনার পর থেকে পলাতক বলেই দাবি তদন্তকারীদের।

পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তর দমদমের তেঁতুলতলার বাসিন্দা কল্পনাদেবী। তিনি ফিজিওথেরাপির কাজ করেন। তাঁর ছেলে সুমন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। ঘটনার সময়ে তিনি অফিসে ছিলেন। অভিযোগ, ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ খাটে বসে টিভি দেখছিলেন ওই প্রৌঢ়া। আচমকাই ঘরে ঢোকে দুই যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা কল্পনাদেবীকে মারধর করে বিছানার উপরে থাকা হলুদ রঙের দু'টি ওড়না দিয়ে তাঁর হাত ও পা বেঁধে দেয়। এর পরে আলনা থেকে কালো রঙের আর একটি ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় ওই প্রৌঢ়ার মুখ। কল্পনাদেবী বলেন, ''ভারী কিছু দিয়ে ওরা আমার মাথায় ও পায়ে মারে। খাট থেকে মেঝেতে ফেলে দেয়। কিন্তু এর মধ্যেই আমি ওদের চিনে ফেলি।'' অভিযোগ, চাবি দিয়ে আলমারি খুলে নগদ কয়েক হাজার টাকা ও সোনার গয়না লুঠ করে ওই দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, আরও ৫ লক্ষ টাকা জোগাড় করে রাখার হুমকি দিয়ে যাওয়া হয় ওই মহিলাকে।

এর বেশ কিছু ক্ষণ পরে প্রতিবেশীরা এসে ওই প্রৌঢ়াকে উদ্ধার করেন। অভিযোগ, কল্পনাদেবীর পোষা কুকুরটিকেও স্প্রে করে বেহুঁশ করে দেওয়া হয়েছিল। কল্পনাদেবীর অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই তাঁকে রাস্তায় দেখে টিপন্নী করতেন অপর্ণাদেবী। তা নিয়ে কয়েক দিন আগে বাজারের মধ্যেই বচসা হয়। তার বদলা নিতেই এই হামলা বলে দাবি প্রৌঢ়ার। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (জোন ২) আনন্দ রায় বলেন, ''অভিযোগ পেয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।''