দু’বছর পর বাড়ি ফিরল পাচার হওয়া কিশোরী, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ


মালবাজার: প্রায় দু'বছর পরে পালিয়ে বাড়ি ফিরল পাচার হয়ে যাওয়া কিশোরী। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে পাচারকারী সুরজ গোয়ালাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরীকে। তারপর মালবাজার শহরের একটি বাড়িতে আটকে রেখে তাকে লাগাতার ধর্ষণ করে পাচারকারী। শেষ পর্যন্ত দালালের মাধ্যমে দিল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই পালিয়ে মালবাজারে ফিরল নির্যাতিতা। ঘটনাটি ডুয়ার্সের মেটেলি ব্লকের ইন্ডং চা বাগান এলাকার।

পুলিশ জানিয়েছে, বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করেই ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় সুরজ। প্রায় দু'বছর আগের ঘটনা। ঘটনার সময় চা বাগানে ছিলেন কিশোরীর বাবা-মা। বাড়িতে ফিরে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও মেয়ে কোথায় জানতে পারেননি। একটা সময় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা "স্টেপ"-এর দ্বারস্থ হন বাবা-মা। বলাবাহুল্য, এই "স্টেপ" মালবাজার এলাকার চা-বাগানে শিশুও নারী পাচার রুখতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। তবে ওই নিখোঁজ কিশোরীর বাবা-মায়ের জন্য বিশেষ কিছুই করে উঠতে পারেনি সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। এদিকে কিশোরীকে মালবাজার শহরের একটি বাড়িতে রেখে লাগাতার ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। তারপর দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে মোটা টাকায় দালালকে বিক্রি করে দেয়। দালাল আবার রাজধানীর এক বাড়িতে পরিচারিকার কাজে লাগিয়ে দেয় নির্যাতিতাকে। সেখানেই দু'বছর ধরে বিনা পরিশ্রমিকে কাজ করছে নির্যাতিতা। অভিযোগ, সেখানেও নানাভাবে অত্যাচারিত হত সে। চোখে চোখে রাখার দরুন বাড়ির বাইরে বেরনোর সুযোগও মিলত না। কয়েকদিন আগে বাড়ির কুকুরকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ মেলে। সেটাকেই কাজে লাগায় কিশোরী। পালিয়ে চলে আসে। এতদিনে বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে ক্ষীণ ধারণা হয়েছে তার। তাই সময় লাগলেও মালবাজারের বাড়িতে ফিরতে অসুবিধা হয়নি। মেয়েকে ফিরে পেয়ে আত্মহারা অভিভাবকরা তাকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে নিয়ে যান। সেখান থেকে মালবাজার থানায় অভিযোগ জানানো হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পাচারকারী সুরজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতিতাকে হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করছে পুলিশ।

Highlights :

নির্যাতিতাকে দালালের কাছে বিক্রি করেছিল পাচারকারী।

দালাল নির্যাতিতাকে দিল্লির এক বাসিন্দার কাছে বিক্রি করে দেয়।

দিল্লিতে দু'বছর বিনা পারিশ্রমিকে পরিচারিকার কাজ করেছে নির্যাতিতা।