যাদবপুরে প্রবেশিকার দাবিতে আমরণ অনশনের হুমকি পড়ুয়াদের, আদালতে যেতে পারে জুটা


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা। 


যাদবপুরে অচলাবস্থা চলছেই। বন্ধ পঠনপাঠন। পড়ুয়া, অধ্যাপক এবং প্রাক্তনীদের যৌথ আন্দোলনের চাপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কলা বিভাগের ছ'টি বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা ফেরানোর দাবিতে যৌথ প্রতিবাদ চলছে। অধ্যাপক সংগঠন জুটা ছাত্রদের পক্ষেই দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার তাঁরা কর্মবিরতির ডাক দেওয়ায় পঠনপাঠন কার্যত শিকেয় উঠেছে।

এরই পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীরাও ক্লাস বয়কট করেছেন। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের বক্তব্য,"দুপুরের মধ্যে অ্যাডমিশন কমিটি তাদের সিদ্ধান্ত বদল না করলে আমরণ অনশন করবেন তাঁরা। হাজার হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যত্ নিয়ে ছেলেখেলা করতে পারেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কয়েক দশক ধরে পরীক্ষার মাধ্যমেই কলা বিভাগে ভর্তি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। হঠাতৎ করে নিয়ম বদল হতে পারে না।"

একই বক্তব্য জুটা-র। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়,বাংলা, ইতিহাস, ইংরাজির মতো বিষয়গুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে নম্বরের ভিত্তিতে মেধা যাচাইয়ের সুযোগ থাকে না। সে কারণেই যাদবপুরে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পড়ুয়াদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কতটা দখল রয়েছে তা যাচাই করা হয়। হঠাৎ করে অ্যাডমিশন কমিটি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। তাই কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
 
নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়ার সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইংরাজি বিভাগের অধ্যাপকরা। তাঁরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবেন না। অধ্যাপকদের এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, অধ্যাপকদের নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে, তবে বিষয়টি কী ভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।তবে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন ইংরাজি বিভাগের অধ্যাপকরা। আর সে কারণেই ইংরাজি বিভাগের মেধাতালিকা বেরনো নিয়ে একটা সংশয় তৈরি হয়েছে।আরও এক ধাপ এগিয়ে জুটা-র হুঁশিয়ারি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি সিদ্ধান্ত বদল না করে প্রয়োজনে তারা আদালতে যাবে।"

এক দিকে ছাত্রছাত্রীদের কড়া মনোভাব, অন্য দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ অধ্যাপকদের বিরোধিতায় শেষ পর্যন্ত যাদবপুরে কলা বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষা ফিরবে কি না, তা সময়ই বলবে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা সিদ্ধান্ত বদলে নারাজ। এ বছরে নম্বরের ভিত্তিতেই ভর্তি নেওয়া হবে।

আগামী ১৯ জুলাই মেধা তালিকা প্রকাশ হবে। ২৭, ২৮, ৩০ ও ৩১ জুলাই ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। ১ অগস্ট ক্লাস শুরু হবে। নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালুর সিদ্ধান্তে শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ পড়ুয়া, প্রাক্তনী এবং অধ্যাপকদের একাংশের।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা ফেরানোর দাবিতে গত কয়েক দিন ধরেই পড়ুয়াদের আন্দোলন চলছে। উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে ঘেরাও করে রাখেন আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘেরাওমুক্ত হন উপাচার্য। যদিও ছাত্রছাত্রীরা এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।