সুইস ব্যাঙ্কে কয়েকশো কোটির ভারতীয় অ্যাকাউন্ট, নেই কোনও দাবিদার


তিন বছর ধরে কয়েকশো কোটি টাকা পড়ে আছে ব্যাঙ্কে, অথচ কেউ দাবি করছেন না! ব্যাঙ্ক উপযুক্ত দাবিদারদের টাকা ফেরাতে চাইছে, তা সত্ত্বেও কেউ এগিয়ে আসছেন না! সম্প্রতি এমনই অনেক দাবিদারহীন ভারতীয় অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলল সুইস ব্যাঙ্কে।
সুইস ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেই ২০১৫ সাল থেকেই এই সমস্ত অ্যাকাউন্টগুলো এ ভাবেই পড়ে রয়েছে। ব্যাঙ্কের পরিভাষায় ডরম্যান্ট অ্যাকাউন্ট। কোনও লেনদেন, না কোনও দাবিদার। এমন ৩৫০০টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যার মধ্যে আবার ৬টি ভারতীয়!

২০১৫ সালে প্রথম লেনদেন বন্ধ অ্যাকাউন্টের তালিকা প্রকাশ করে সুইস ব্যাঙ্ক। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে মোট ৩,৫০০টি অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করেছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। উপযুক্ত নথি এবং প্রমাণ দিয়ে সেই অ্যাকাউন্টের দাবি করতে পারেন যে কেউ। দাবিদারকে উপযুক্ত মনে করলে সেই তালিকা থেকে ওই অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হবে। ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ২০১৭ সালে উপযুক্ত দাবিদার মেলায় এই তালিকা থেকে এমন ৪০টি অ্যাকাউন্ট এবং দুটো সেফ ডিপোজিট বক্স মুছে ফেলা হয়। কিন্তু যে ছ'টি অ্যাকাউন্ট ভারতীয় বলে তালিকা প্রকাশ করেছে সুইস ব্যাঙ্ক, এখনও পর্যন্ত সেই অ্যাকাউন্টগুলিকে কেউই নিজের বলে দাবি করেননি।

যে ছ'টি অ্যাকাউন্ট ভারতীয়দের বলে জানিয়েছে সুইস ব্যাঙ্ক, তার মধ্যে তিনজন ভারতে থাকেন। একজন প্যারিস, একজন লন্ডনে থাকেন। আর একজনের নাম প্রকাশ করা হয়নি। যাঁরা ভারতে থাকেন তাঁরা হলেন মুম্বইয়ের পিইরি ভাচেক এবং বারনেট রোজমেরি। দেহরাদূনের বাহাদুর চন্দ্র সিংহ। প্যারিসের ওই অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম মোহন লাল এবং লন্ডনের সুচা যোগেশ প্রভুদাস। আর যাঁর নাম ঠিকানা প্রকাশ করা হয়নি ওই ষষ্ঠ ব্যক্তি হলেন কিশোর লাল।

ভারত ছাড়াও ওই তালিকায় পাকিস্তান, জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন, আমেরিকা, তুরস্ক, অস্ট্রিয়া এমনকি সুইজারল্যান্ডেরও অনেক অ্যাকাউন্ট হোল্ডার আছেন।

সুইস ব্যাঙ্কে বিদেশিদের টাকা রাখার নিরিখে ভারতের স্থান এখন ৭৩ নম্বরে। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে কালো টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতির দেওয়ার পরও সুইস ব্যাঙ্কে জমা করা ভারতীয়দের অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৫০ শতাংশ।

ক্ষমতায় আসার আগে দেশবাসীকে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, তার মধ্যে অন্যতম ছিল কালো টাকা উদ্ধার। ২০১৬-র নোটবন্দি নিয়ে কম বিতর্কের মুখে পড়তে হয়নি মোদী সরকারকে। সুইস ব্যাঙ্ক থেকে বারবারই সমস্ত কালো টাকা উদ্ধারের কথা বলে এসেছেন মোদী কিন্তু সে টাকা আদৌ উদ্ধার হয়নি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গয়াল পরে দাবি করেন ২০১৯ সালের মধ্যে সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত ভারতীয় অ্যাকাউন্টের সব তথ্য হাতে চলে আসবে।