‘বিরাট কিন্তু মিথ্যা বলছে’, টেস্টের আগেই ‘বাউন্সার’ অ্যান্ডারসনের


কটাক্ষ: ভারত অধিনায়ককে বিঁধলেন ইংল্যান্ড পেসার অ্যান্ডারসন। ১ অগস্ট প্রথম টেস্টের আগেই বাড়ছে উত্তাপ।


সরকারি সূচি অনুযায়ী ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট শুরু হওয়ার কথা পয়লা অগস্ট, বার্মিংহামে। কিন্তু তার আগেই বিরাট কোহালির বিরুদ্ধে 'বল' হাতে নেমে পড়লেন জিমি অ্যান্ডারসন। ভারত অধিনায়কের দিকে আঙুল তুলে বলে দিলেন, ''কোহালি তো মিথ্যে কথা বলছে!''

কী এমন কথা বলেছেন কোহালি, যে জন্য এই মন্তব্য করলেন অ্যান্ডারসন? ইংল্যান্ড পেসারের ব্যাখ্যা, ''কোহালি নাকি বলেছে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ও রান পেল কি পেল না, তাতে কিছু যায় আসে না? আমার মনে হচ্ছে, কোহালি মিথ্যে কথা বলছে।'' একটু হেসেই বললেন অ্যান্ডারসন।

কিন্তু কেন হঠাৎ কোহালির বিরুদ্ধে এই দোষারোপ? স্বাভাবিক ভাবে যে ব্যাখ্যাটা উঠে আসছে, তা হল, টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেই মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছেন অ্যান্ডারসন। শেষ বার ইংল্যান্ড সফরে এসে এই অ্যান্ডারসনের বলেই সমস্যায় পড়েছিলেন কোহালি। ২০১৪ সালের ওই সফরে পাঁচ টেস্টে চার বার তাঁকে আউট করেন ইংল্যান্ডের পেসার। এ বারও লড়াইটা আগেভাগেই শুরু করে দিলেন অ্যান্ডারসন।

ইংল্যান্ড সফরের শুরুতে নিজের ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন শুনতে হয়েছিল কোহালিকে। ভারত অধিনায়ক তখন বলেছিলেন, দল জিতলেই তিনি খুশি। নিজে কত রান করলেন, তা নিয়ে ভাবতে চান না। যে প্রসঙ্গে অ্যান্ডারসন এখন বলছেন, ''ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারত সিরিজ জিততে পারবে কি না, তা অনেকটাই নির্ভর করবে কোহালির পারফরম্যান্সের ওপর। কোহালি এখানে রান করার জন্য মরিয়া হয়ে থাকবে। যে কোনও অধিনায়কের কাছ থেকেই সেটা প্রত্যাশিত। আর কোহালি তো বিশ্বের অন্যতম সেরা এক জন ব্যাটসম্যান।''

তবে ৩৫ বছর বয়সি এই পেসার স্বীকার করে নিচ্ছেন, এ বারের কোহালি আর চার বছর আগের কোহালির মধ্যে নিশ্চয়ই বিস্তর ফারাক হবে। অ্যান্ডারসনের মন্তব্য, ''এখনকার ক্রিকেটারেরা অতীত অভিজ্ঞতা, ম্যাচের ভিডিয়ো রেকর্ডিং— সব কিছু থেকেই শিক্ষা নেয়। আমি নিশ্চিত, চার বছর আগের সিরিজ থেকে নিশ্চয়ই শিক্ষা নিয়েছে কোহালি।'' অ্যান্ডারসন যোগ করেন, ''আমি এও জানি, কোহালি ওর ব্যাটিংয়ের কিছু কিছু ব্যাপার উন্নত করার জন্য পরিশ্রম করছে। এর ফলে শুধু আমার সঙ্গে কোহালির দ্বৈরথ নয়, ওর সঙ্গে ইংল্যান্ড বোলারদের লড়াইটা নিশ্চয়ই আরও জমে যাবে।''

দু'বছর আগে ভারত সফরে গিয়ে সফল হননি অ্যান্ডারসন। যার পরে আর. অশ্বিনের সঙ্গে পিচ নিয়ে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। অ্যান্ডারসন বলছেন, ''ভারতে পিচ খুব মন্থর হয়। এখানে পিচে আর একটু গতি থাকে। ফলে বোলাররা আর একটু সাহায্য পাবে।'' কিন্তু এ বারে ইংল্যান্ডে অতিরিক্ত গরম পড়ায় পিচ শুকনো হবে বলেই অনেকে মনে করছেন। যা নিয়ে অ্যান্ডারসন বলছেন, ''এখানে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ গরম পড়েছে। তাই পিচ শুকনো হতে পারে। যে কারণে ভারতই হয়তো পিচ থেকে বেশি সুবিধে পাবে। এই ব্যাপারটা আমাদের মাথায় থাকবে। তবে এও আশা করব, টেস্ট শুরুর আগে কয়েক দিন ভালই বৃষ্টি হবে। তা হলে উইকেটে কিছুটা ঘাস গজানোর সময় পাওয়া যাবে।''

এই সফরে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ান ডে সিরিজ নিয়ে ৩০১ রান করেছেন কোহালি। গড় ৬০.২। তার মানে তো কোহালি বেশ ভালই ছন্দে আছেন। অ্যান্ডারসনের বক্তব্য, ''দেখুন, এই ভাবে বলা সম্ভব নয়। সাদা বলের চেয়ে লাল বল একটু বেশি সুইং করে, সিমে পড়ে বেশি মুভ করে। তার মানে সাদা বলে রান করা সহজ, এমন নয়। এই ভাবে বলা যায় না।'' কোহালির দক্ষতা নিয়ে ইংল্যান্ডের পেসার বলেছেন, ''কোহালির মতো ব্যাটসম্যানরা বলটা অনেক দেরিতে খেলে। ওরা অনেক বেশি সময় পায় হাতে। যা দেখলে যে কোনও বোলারকে মন্থর মনে হয়। সাদা বল, লাল বল— কোহালিকে কোনও কিছুতেই অত সহজে আটকানো যায় না। তবে সাদা বলের ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানরা বেশি স্ট্রোক খেলতে যায় বলে আউট করার সুযোগ একটু বেশি পাওয়া যায়।''

এ বি ডিভিলিয়ার্স, জো রুট, স্টিভ স্মিথ এবং কোহালি— বিশ্ব ক্রিকেটের এই চার সেরা ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধেই বল করেছেন অ্যান্ডারসন। কাকে শ্রেষ্ঠ বাছবেন? অ্যান্ডারসনের জবাব, ''আমি ওদের কারও বিরুদ্ধেই বল করতে চাই না।''