নগ্ন ছবি দেখিয়ে ‘প্রেমিকার’ ব্ল্যাকমেল, আত্মঘাতী সোনারপুরের তরুণ


সৌরভ ঘোষ।

দিন দিন প্রেমিকার মানসিক অত্যাচার বেড়েই চলেছিল। চাপ দিচ্ছিলেন টাকা দেওয়ার জন্য।সেই টাকা দিতে না পারলে হেনস্থা, বাড়ির লোকেদের দিয়ে মারধরও করতেন। শুধু তাই নয়, শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও দেখিয়ে নানা ভাবে ব্ল্যাকমেল করা হত। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে শেষমেশ আত্মহত্যার পথই বেছে নেন সৌরভ ঘোষ নামে এক তরুণ।

পুলিশ সূত্রে খবর, সৌরভের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে। তাঁর এক দাদা থাকেন উত্তর ২৪ পরগনার হৃদয়পুরে। গত ১৯ জুলাই সেই দাদার বাড়িতে গিয়েছিলেন সৌরভ। ওই দিনই তিনি হৃদয়পুর স্টেশনের কাছে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহ্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে উদ্ধার করে বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে তাঁকে দক্ষিণ শহরতলির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই ২১ জুলাই মৃত্যু হয় সৌরভের। আত্মহত্যার চেষ্টা করার আগে মোবাইলে একটি ভিডিয়ো করেন তিনি। সেখানে প্রেমিকা সম্পর্কে তাঁর নানা অভিযোগ জানান।

সোনারপুরেই থাকেন সৌরভের প্রেমিকা পূজা দাস।তাঁর বাড়ি স্থানীয় বুড়ি বটতলায়। সৌরভের বাড়ির পাশেই পূজার মামাবাড়ি। সেখানে যাওয়া-আসার সুবাদেই দু'জনের মধ্যে পরিচয়। তার পর ঘনিষ্ঠতা থেকে প্রেম।সৌরভ কলেজ স্ট্রিটের একটি বইয়ের দোকানে কাজ করতেন। অভিযোগ, সেখান থেকে তিনি যা উপার্জন করতেন তার বেশির ভাগটাই প্রেমিকার চাহিদা মেটাতে খরচ হয়ে যেত। তবে, সেই চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকে।একটা সময় সৌরভের পক্ষেও তা মেটানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছিল৷তাই নিয়ে দু'জনের মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা লেগে থাকত। অভিযোগ, তাঁকে টাকা দেওয়ার জন্য সৌরভকে প্রায় দিন চাপ দিতেন পূজা। টাকা দিতে না পারলে তাঁদের ঘনিষ্ঠ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায়ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দিতেন।

গত কয়েক মাসধরে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।সেটা মেনে নিতে পারেননি পূজা। বাড়ির লোকেদের নিয়ে এসে  সৌরভকে মারধর করেন বলেও অভিযোগ।সৌরভের বাবা-মাকেও অপমান করা হয়। এ নিয়ে প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগছিলেন সৌরভ। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, প্রেমিকার মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।এই ঘটনায় পূজা, তাঁর বাবা, মা, মামা ও মামীর বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সৌরভের পরিবার৷ তদন্ত শুরু করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ।